শুক্রবার, ২০ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

বোরো ধানের দাম নিয়ে কৃষকের শঙ্কা

চাহিদা ৬০ লাখ মেট্রিক টন উৎপাদন ১ কোটি ২২ লাখ মেট্রিক টন

নজরুল মৃধা, রংপুর

রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলে প্রতি বছর আমন, আউস ও বোরো ধানের চাহিদা ৬০ লাখ মেট্রিক টন আর উৎপাদন হয় ১ কোটি ২২ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন। অর্থাৎ এক বছরে এ অঞ্চলে খাদ্যের উদ্বৃত্ত থাকছে ৬২ লাখ মেট্রিক টনের বেশি। এর পরও কৃষক তাদের উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত। প্রতিটি ফসল ওঠার মৌসুমে একটি সিন্ডিকেট মাঠপর্যায়ে কৃষকের কাছ থেকে কম দামে খাদ্যশস্য কিনে মজুদের পাহাড় গড়ে মুনাফা লুটছে। সরকার মজুদবিরোধী অভিযানের ঘোষণা দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ফলে এবারও বোরো মৌসুমে কৃষক ধানের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা করছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, উত্তরের ১৬ জেলায় মোট আবাদযোগ্য জমির ২৭ লাখ ১৬ হাজার ৩৫৪ হেক্টর। এর মধ্যে রংপুর অঞ্চলে ১২ লাখ ৯৮ হাজার ও রাজশাহী অঞ্চলে সোয়া ১৪ লাখ হেক্টর। উত্তরাঞ্চলের জনসংখ্যা সাড়ে ৩ কোটি। এর মধ্যে ১১ শতাংশ রয়েছে শিশু, বৃদ্ধ ও খাদ্য গ্রহণে অনুপযোগী। এ ১১ শতাংশ বাদ দিলে উত্তরাঞ্চলে খাদ্য গ্রহণকারী জনসংখ্যা ৩ কোটির কিছু ওপরে। একজন মানুষ প্রতিদিন ৪৫৩ দশমিক ৬ গ্রাম খাদ্য গ্রহণ করতে পারে। সে হিসেবে এ অঞ্চলের মানুষের প্রতি বছর খাদ্যের চাহিদা প্রায় ৬০ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে রংপুর অঞ্চলের খাদ্য চাহিদা ২৯ লাখ ৭৫ হাজার ৪১১ ও রাজশাহী অঞ্চলে ৩০ লাখ ২৬ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন। রংপুর অঞ্চলে উদ্বৃত্ত থাকছে প্রায় ২৯ লাখ ও রাজশাহী অঞ্চলে প্রায় ৩৩ লাখ মেট্রিক টন। এ উদ্বৃত্ত খাদ্য এ অঞ্চলের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। রংপুর সদরের কৃষক গৌরাঙ্গ মহন্ত, কাউনিয়ার আফজাল হোসেন, রফিকুল ইসলাম, মিঠাপুকুরের আশরাফুল ইসলামসহ অনেকেই জানালেন, বর্তমানে বাজারে বোরো ধান ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এ দামে ধান বিক্রি করলে তাঁদের দোনপ্রতি (২৪ শতক) লোকসান হবে ৫০০ টাকা। একরে প্রায় ২ হাজার টাকা। অন্যদিকে যাঁরা লিজ নিয়ে আবাদ করেছেন তাঁদের দোনপ্রতি লোকসান প্রায় আড়াই হাজার টাকা। অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও প্রতিটি পণ্যেই তাঁরা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খামারবাড়ি ঢাকার উপপরিচালক আবু সায়েম বলেন, ‘সরকার কৃষকের কাছ থেকে ধান-চাল কেনাসহ কৃষকের ধানের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তিতে বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ফলে কৃষক মোটামুটি ফসলের দাম পাচ্ছে। আমি আশা করি ধানের দাম আরও বাড়বে।’

সর্বশেষ খবর