রবিবার, ২৯ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

সংকটে মাঝারি ও ছোট ব্যবসায়ীরা

এলসি মার্জিন বৃদ্ধি

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

ডলার সংকট এবং ঋণপত্র (এলসি) খুলতে নগদ মার্জিন হার বৃদ্ধির কথা বলে পণ্য আমদানির জন্য এলসি খুলতে ‘ধীর নীতি’ অনুসরণ করছে কিছু কিছু ব্যাংক। এতে বিপাকে পড়েছেন দেশের মাঝারি ও ছোট মানের ব্যবসায়ীরা। এলসি খুলতে দেরি হওয়ার ফলে বিলম্ব হচ্ছে পণ্য আমদানিতে। ব্যবসায়ীদের দাবি- ব্যাংকগুলোর ধীর নীতি অনুসরণের ফলে বিলম্বিত হচ্ছে পণ্য আমদানি। ফলে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই আমদানিযোগ্য পণ্যের সংকট সৃষ্টি হবে। চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘অপেক্ষাকৃত কম প্রয়োজনীয় ও বিলাসী পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে মার্জিন হার বাড়ানো হয়েছে। ভোগ্যপণ্যের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। ডলার সংকট এবং মার্জিনের কথা বলে এলসি না খোলার সুযোগ নেই।’

দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দ ছগির আহমেদ বলেন, ‘এলসি মার্জিন বৃদ্ধি করার ফলে ছোট এবং মাঝারি মানের ব্যবসায়ীরা কিছুটা বেকায়দায় আছেন। মার্জিন বেশি হওয়ার কারণে আমদানি ব্যয়ও বৃদ্ধি  পেয়েছে। যার প্রভাব পড়বে ভোক্তা পর্যায়ে।’

খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘ডলার সংকট এবং এলসি কড়াকড়ির কথা বলে অনেক ব্যাংকই এলসি খুলতে ধীর নীতি অনুসরণ করছে। এতে বিপাকে পড়েছেন ছোট এবং মাঝারি মানের ব্যবসায়ীরা। ফলে অনেক পণ্যই আমদানিতে বিলম্ব হচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী কয়েক মাস পর সংকট সৃষ্টি হবে। তাই এলসি নীতি আরও সহজ করার দাবি করছি সরকারের কাছে।’

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ডলার সংকট কাটিয়ে উঠতে এলসি মার্জিন হার বৃদ্ধি করার পর থেকেই ব্যাংকগুলো আমদানি এলসি খুলতে ‘দ্বিমুখী’ আচরণ করছে। বড় ব্যবসায়ীদের জন্য ‘এলসি’ দ্বার উন্মুক্ত করে রাখলেও মাঝারি এবং ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য রুদ্ধ সেই দ্বার। তারা ডলারের কৃত্রিম সংকট এবং নগদ মার্জিন হার বৃদ্ধির কথা বলে বিলম্ব করছে এলসি খুলতে। ব্যাংকের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও খুলতে পারছে না এলসি। এতে বিপাকে পড়েছে মাঝারি ও ছোট আমদানিকারকরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে খাতুনগঞ্জের এক আমদানিকারক বলেন, প্রতি মাসে ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার পণ্য আমদানি করি। এত দিন এলসি খুলতে ব্যাংকাররাই আসতেন তদবির নিয়ে। এলসি নীতি কড়াকড়ির কারণে উল্টো ব্যাংকারদের কাছেই ধরনা দিতে হচ্ছে এলসি খুলতে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই ’২১-মার্চ ’২২) ৬ হাজার ১৫২  কোটি ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ বেশি। এ অবস্থায় চাহিদার বিপরীতে ডলার সংকট কাটিয়ে উঠতে অপেক্ষাকৃত কম প্রয়োজনীয় ও বিলাসী পণ্য আমদানি নিয়ন্ত্রণে কড়াকড়ি করে। বর্তমানে এলসি নগদ মার্জিন হার বাড়িয়ে ৫০ থেকে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর