শুক্রবার, ৩ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

স্বপ্ন দেখছে উপকূলের মানুষ

ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধের ১১টি পয়েন্ট পুনর্নির্মাণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

স্বপ্ন দেখছে উপকূলের মানুষ

২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে উপকূলীয় খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার ১১টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। পানিবন্দি হয়ে পড়েন তিনটি উপজেলার প্রায় ২ লাখ মানুষ। ২০২১ সালে ভারী বৃষ্টিপাতে আবারও ক্ষতিগ্রস্ত হয় এসব বাঁধ। এ অবস্থায় বারবার ভাঙন রোধে দ্রুত টেকসই বাঁধ নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয় সেনাবাহিনীকে। স্থানীয় প্রশাসন ও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সেনাবাহিনীর  ৫৫ পদাতিক ডিভিশন ১১টি পয়েন্টের ১০ দশমিক ৫৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধে সফলভাবে সংস্কার কাজ করেছে। প্রায় ১৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর শুরু হয়ে ২০২২ সালে ৩০ এপ্রিল নির্মাণকাজ শেষ হয়।

কয়রা বড়বাড়িয়া এলাকার মুজিবর সানা জানান, ‘আগে যখন বাঁধ ভাঙত ঠিকাদারের মাধ্যমে মাটি দিয়ে যেনতেনভাবে বাঁধ মেরামত করা হতো। জোয়ারের পানির চাপে  কিছুদিন পরই ওই বাঁধ আবার ভেঙে যেত। কিন্তু বর্তমানে সেনাবাহিনী জিও ব্যাগ ও ব্লক দিয়ে যে বাঁধ তৈরি করেছে তা মজবুত হয়েছে। ঢেউ এলে এখন আর মাটি সরে যায় না। ফলে এলাকার মানুষ কৃষিতে নতুন করে স্বপ্ন দেখছে। একই এলাকার বাসিন্দা মনোরঞ্জন বিশ্বাস জানান, আম্ফানে বাঁধ ভেঙে ঘরবাড়ি মাঠের ফসল ডুবে গিয়েছিল। যেখানে একটু উঁচু ছিল মানুষজন সেখানে আশ্রয় নিয়েছে। এখন টেকসই বাঁধ হওয়ায় জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পেয়েছে মানুষ। নতুন করে অনেকে কৃষি ও মাছের ঘের শুরু করেছেন।

জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় আইলা, ফণি, বুলবুল, আম্ফান- এভাবে একের পর এক দুর্যোগে লণ্ডভণ্ড হয়েছে এ জনপদ।

জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙে ঘরবাড়ি, মাছের ঘের প্লাবিত হয়েছে। বিপর্যস্ত উপকূলের মানুষের প্রাণের দাবি ছিল টেকসই বেড়িবাঁধের। সেনাবাহিনীর উদ্ভাবনী প্রযুক্তিতে জিও সিনথেটিক ব্যাগ ও টেকসই ব্লক দিয়ে বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো মেরামত করা হয়েছে। ৩০ মে নির্মিত বাঁধগুলো পাউবোর কাছে হস্তান্তর করা হয়।

প্রকল্প পরিচালক ও ৩ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল গাজী মাসুদ মো. মাহেনুর বলেন, বাঁধে ব্যবহৃত জিও সিনথেটিক ব্যাগকে বিভিন্ন ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়েছে। জিও ব্যাগগুলো যতই পানিতে ভিজবে ততই স্থায়িত্ব বাড়বে। বাঁধ টিকিয়ে রাখতে পানির নিচে যেখানে যে মালামাল যতটুকু দেওয়ার কথা তা দেওয়া হয়েছে।  

১০৫ পদাতিক ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোল্লা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ১১টি পয়েন্টে বাঁধ পুনঃনির্মাণে সেনাবাহিনী কাজ করেছে। মানসম্মতভাবে নির্মিত বাঁধগুলো আগামী দিনে দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রতিরক্ষা দিতে পারবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর