রবিবার, ১২ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

ধানের উৎপাদন খরচ কমাতে যান্ত্রিকীকরণের বিকল্প নেই

রংপুরে ধান কেটে শ্রমিকের আয় ২০০ কোটি টাকার ওপর

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

এবার রংপুর বিভাগের আট জেলায় কৃষি মৌসুমি শ্রমিকরা বোরো মৌসুমে ধান কাটা-মাড়াই করে এক মাসে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আয় করেছেন। গত কয়েক মৌসুম থেকে কৃষি শ্রমের মূল্য ৫-৬ গুণ বৃদ্ধি হওয়ায় শ্রমিকরা খুশি হলেও ধানের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। ধান কাটা-মাড়াইয়ে পুরোপুরি যান্ত্রিকীকরণ করা হলে উৎপাদন খরচ অনেকটা কমবে- এমনটাই মনে করছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, রংপুর বিভাগের আট জেলার চাষিরা ৮ লাখ হেক্টরের বেশি জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছে। এ পরিমাণ জমি থেকে প্রায় ৩৫ লাখ মেট্রিক টনের বেশি ধান গোলায় তোলার আশা করা হচ্ছে। কৃষি অফিসের তথ্যমতে, গতকাল পর্যন্ত ৯৫ থেকে ৯৭ শতাংশ ধান কাটা-মাড়াই হয়েছে। তবে ধান কাটা-মাড়াই করতে কৃষি শ্রমিক পাওয়াই দুষ্কর হয়ে পড়েছে। দিন হাজিরায় শ্রমিকরা ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা করে পারিশ্রমিক নিয়েছে। কৃষিবিদদের মতে, ধান কাটা-মাড়াই যান্ত্রিকীকরণ করা হলে ধানের উৎপাদন খরচ ও সময় দুটোই কম হবে। রংপুর জেলায় ১ লাখ ৩১ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে।

এর মধ্যে যন্ত্রের সাহায্যে ধান কাটা হয়েছে মাত্র ১০ হাজার হেক্টর। একই অবস্থা বিভাগের অন্য জেলাগুলোতেও।

মিঠাপুকুরের কৃষক হাবিবুর রহমান, আশরাফুল, রংপুরের পরশুরাম এলাকার আমিন, মন্টু মিয়া গঙ্গাচড়ার গান্নারপাড় এলাকার মিজানুরসহ কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাট-বাজারগুলোতে বিভিন্ন ধরনের বোরো ধান কেনাবেচা হচ্ছে ৯০০ থেকে ১০০০ টাকায়। কৃষকরা জানান, পাঁচ বছর আগেও ১ একর জমির ধান কাটা-মাড়াই করতে ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা লাগত। ১ দোন (২৪ শতক) জমির ধান কাটা-মাড়াই করে ঘরে তুলতে কৃষকদের খরচ হচ্ছে আড়াই হাজার টাকা। সেই হিসাবে প্রতি একরে খরচ পড়ছে ১০ হাজার টাকার ওপর। দিন হাজিরায় যেসব শ্রমিক কাজ করত তাদেরও মজুরি বেড়েছে কয়েক গুণ। পাঁচ বছর  আগে দেড় শ টাকায় যে শ্রমিক দিন হাজিরায় কাজ করত এবার তারা ৫০০ টাকার নিচে কাজ করছে না। কোনো কোনো স্থানে তিনবেলা খাওয়াসহ এই হাজিরা পাচ্ছে। 

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, রংপুর বিভাগে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ কৃষি শ্রমিক রয়েছে। এরা শুধু আমন ও বোরো মৌসুমে ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ করে। শ্রমের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় এসব শ্রমিক এবার ২০০ কোটি টাকার ওপর আয় করেছে। এবার ধান কাটা-মাড়াই করে ওইসব শ্রমিক ভালো থাকলেও ধানের উৎপাদন খরচ বেড়েছে কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল  জানান, এ পর্যন্ত ৯৭ শতাংশের বেশি জমির ধান কাটা-মাড়াই হয়ে গেছে। যান্ত্রিকীকরণ প্রতি বছরই বাড়ছে। কাটা-মাড়াই যান্ত্রিকীকরণ হলে ধানের উৎপাদন খরচ কিছুটা কমে যাবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর