বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

চিংড়িতে নতুন স্বপ্ন দক্ষিণাঞ্চলে

ভেনামিতে আশার আলো দেখছেন রপ্তানিকারকরা

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

চিংড়িতে নতুন স্বপ্ন দক্ষিণাঞ্চলে

২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশে হিমায়িত চিংড়ির রপ্তানি আয় ছিল ৪০১৪ কোটি টাকা। সেখানে ২০২০-২১ অর্থবছরে রপ্তানি আয় দাঁড়ায় ২৯৫৯ কোটি টাকা। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী- মাত্র চার বছরের ব্যবধানে দেশে চিংড়ি খাতে রপ্তানি আয় কমেছে প্রায় ১০৫৫ কোটি টাকা।

রপ্তানিকারকরা বলছেন, চিংড়ি উৎপাদন কমে যাওয়ায় কাঁচামালের অভাবে একের পর এক বন্ধ হচ্ছে হিমায়িত চিংড়ি প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা। এ অবস্থায় চিংড়ি উৎপাদন বৃদ্ধির বিকল্প নেই।

এদিকে বিশ্ববাজারে চিংড়ি রপ্তানিতে পিছিয়ে পড়লেও ফের সম্ভাবনার দিকে এগোচ্ছে দক্ষিণের সাদা সোনা। বাগদার চেয়ে খরচ কম হওয়ায় ভেনামিতে আশার আলো দেখছেন রপ্তানিকারকরা। তাদের আশা, এ চিংড়ির বাণিজ্যিক চাষ শুরু হলে আবারও চালু হবে বন্ধ হওয়া কারখানা। কর্মসংস্থান তৈরির পাশাপাশি বদলে যাবে অর্থনীতিও।

বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, খুলনা অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট এস হুমায়ুন কবির জানান, নানা সংকটে দেশে বাগদা চিংড়ির উৎপাদন কমে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে অনেক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। ১৭৮টি কারখানার মধ্যে কাগজে-কলমে চালু আছে ১০৫টি। যার মধ্যে উৎপাদনে আছে ৩০-৪০টি। যারা চাহিদা অনুযায়ী চিংড়ি না পাওয়ায় উৎপাদন সক্ষমতার ২০ শতাংশ কাজে লাগাতে পারছে। তিনি বলেন, এই যখন পরিস্থিতি তখন বিদেশি জাতের ভেনামি চিংড়িতে সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। কারণ এই চিংড়ির উৎপাদন যেমন বেশি, এর পেছনে খরচও অনেক কম। এর মধ্যে ১১টি প্রতিষ্ঠানকে অধিক উৎপাদনশীল ভেনামি উৎপাদনের অনুমতি দিয়েছে মন্ত্রণালয়। আমরা যত বেশি চিংড়ি উৎপাদন করতে পারব, কারখানাগুলো তত ভালো চলবে। বিদেশে রপ্তানিও বাড়বে।

এমইউ সি ফুডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শ্যামল দাস জানান, দামে তুলনামূলক কম হওয়ায় বিদেশে হাইব্রিড প্রজাতির ভেনামি চিংড়ির কদর বাড়ছে। গলদা ও বাগদা চিংড়ির চাষ বছরে একবারের বেশি করা যায় না। আর ভেনামি চাষ করা যায় বছরে তিনবার। সাধারণ পুকুরে প্রতি হেক্টরে ৩০০-৪০০ কেজি বাগদা চিংড়ি পাওয়া যায়। সেখানে একই পরিমাণ জমিতে ৪ থেকে ৫ হাজার কেজি ভেনামি চিংড়ি উৎপাদন সম্ভব। দেশে ভেনামি চিংড়ির বাণিজ্যিক চাষ শুরু হলে রপ্তানিতে উল্লেখযোগ্য অবস্থান অর্জন করতে পারবে বাংলাদেশ।

এদিকে চিংড়ি উৎপাদন বৃদ্ধিতে মৎস্য অধিদফতর বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলে জানালেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল। তিনি বলেন, দেশে ২ লাখ ৭৯ হাজার হেক্টর জমিতে চিংড়ির চাষ হয়। চিংড়ির উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ ও খাল খননসহ নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। বাগদা ও গলদার পাশাপাশি ভেনামি জাতের চিংড়ি চাষ সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর