সোমবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

জেলে ২০ হাজার, খাদ্য সহায়তা পাচ্ছেন ৪ হাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীতে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ২০ হাজার ৬০০ জন। তবে সহায়তা পাচ্ছেন ৪ হাজার জেলে। বাকি সাড়ে ১৬ হাজার জেলেকে দেওয়া হচ্ছে না কোনো সহায়তা। এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তারা। খাদ্য সহায়তার তালিকায় নাম না থাকা জেলেরা বলছেন, প্রতিবার মংস্য কর্মকর্তারা তাদের নাম দেন না। অথচ তারা সরকারি নির্দেশ মেনে মাছ ধরতে নদীতে যান না। তাদের এ কয়েকদিন মানববেতর জীবনযাপন করতে হয়। আগের বছরগুলোতে নিষেধাজ্ঞা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে খাদ্যসহায়তা দেওয়া হতো জেলেদের। এবার নিষেধাজ্ঞার এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও জেলেরা খাদ্য সহায়তা পাননি। খাদ্য সহায়তার চাল পেতে তাদের আরও কয়েকদিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছে মৎস অধিদফতর। মা ইলিশ রক্ষায় গত ৭ অক্টোবর থেকে নদীতে সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। আগামী ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত থাকবে এই নিষেধাজ্ঞা। এই তিন সপ্তাহ জেলেরা নদীতে নামতে পারবেন না। প্রতি বছর এমন নিষেধাজ্ঞার সময়ে জেলেদের খাদ্যসহায়তা দিয়ে থাকে সরকার।

রাজশাহী জেলা মৎস্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজশাহীর চার উপজেলা ও মহানগর মিলিয়ে মোট ২০ হাজার ৬০০ জন নিবন্ধিত জেলে আছেন। জেলে পরিবার আছে ৮ হাজার। তবে চাল পাচ্ছেন ৪ হাজার জেলে। মূলত পদ্মা নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন এ জেলেরা। রাজশাহী মহানগরী ও জেলার গোদাগাড়ি, পবা, চারঘাট ও বাঘা উপজেলার মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে পদ্মা নদী।

রাজশাহীর এই ৪ হাজার জেলের প্রত্যেককে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। এ জন্য ১০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। তবে সেই চাল এখনো জেলেরা পায়নি। আগে ২০ কেজি করে চাল দেওয়া হতো এখন তা পাঁচ কেজি চাল বাড়ানো হয়েছে।

রাজশাহী নগরীর শ্রীরামপুর এলাকার জেলে আবুল কাশেম বলেন, ‘প্রতি বছর অক্টোবরের নির্দিষ্ট সময় নদীতে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকে। কিন্তু কোনো খাদ্য সহায়তা পাওয়া যায় না। মংস্য কর্মকর্তারা তালিকা তৈরি করে অন্যদের ডেকে চাল দেন। কিন্তু আমাদের মতো অনেক জেলেদের দেন না। এই তিন সপ্তাহ আমাদের খেয়ে না খেয়ে দিন পার করতে হয়।’

গোদাগাড়ী উপজেলার শেখেরপাড়া গ্রামের জেলে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা জেলে। হঠাৎ করে অন্য কাজ পারি না। কেউ কাজে ডাকেও না। এই সময়টা জাল বুনে পার করি। কিন্তু হাতে তো টাকা আসে না। সরকার থেকে কোনো সহায়তা পাই না। কী কারণে পাই না তাও জানি না।’

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এবার বরাদ্দ পেতে দেরি হয়েছে। গত সপ্তাহে মন্ত্রণালয় থেকে চাল বরাদ্দের চিঠি পেয়েছি। তারপর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তাকে দিয়েছি। ইতোমধ্যে চাল দেওয়া শুরু হয়েছে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর