শিরোনাম
শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

বিপাকে ১২ হাজার শিক্ষার্থী

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

বিপাকে ১২ হাজার শিক্ষার্থী

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সুস্বাস্থ্যের প্রধান পাথেয়। গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শৌচাগারগুলোতে দেখা যায় এর বিপরীত চিত্র। দুর্গন্ধ আর অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে অধিকাংশ শৌচাগার। বিপাকে পড়েছেন ১২ হাজার শিক্ষার্থী।

শৌচাগারে সিটকিনিহীন পুরনো ভাঙা দরজা, দুর্বল চৌকাঠ, জলাবদ্ধতা যেন নিত্যসঙ্গী। অভিযোগ আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের দায়িত্বহীনতার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। একাডেমিক ভবনের ১৬০টি শৌচাগারের অধিকাংশেই বিরাজ করছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন পরপর শৌচাগারগুলো পরিষ্কার করার কারণে এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সরেজমিন দেখা যায়, একাডেমিক ভবনের প্রথম তলার বেশ কিছু শৌচাগারের দরজা ভাঙা। দরজার সিটকিনি অনেক আগেই খসে পড়েছে। শৌচাগারের পানির ট্যাপ ভাঙা বা কাঠি গুঁজে রাখা। এখান থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। শৌচাগারের সামনের করিডর ধরে হেঁটে যাওয়ার সময় নাকে রুমাল চাপাতে হয়। ওপরের তলার অধিকাংশ শৌচাগার বন্ধ। এ কারণে দুই-তিনটি ফ্লোরের চাপ পড়েছে নিচতলায়। প্রশাসনিক ভবনের শৌচাগারগুলোর দরজা কিংবা পানির লাইনের তেমন সমস্যা না থাকলেও এগুলোও নোংরা এবং অতিরিক্ত দুর্গন্ধযুক্ত। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র হৃদয় সরকার জানান, নির্দিষ্ট সময় পরপর শৌচাগারগুলো পরিষ্কার করা হয় না। তিনি আরও জানান, একাডেমিক ভবনের অধিকাংশ শৌচাগারের পানির ট্যাপগুলো ভাঙা। এগুলো দিয়ে অতিরিক্ত পানি বেরিয়ে ফ্লোর নোংরা হয়। ক্লিনাররা কোনো পদক্ষেপ নেন না। শৌচাগার ব্যবহারে আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী উৎস বিশ্বাস বলেন, ক্লিনারদের অবহেলার কারণে আমাদের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকতে হচ্ছে। তিনি জানান, শৌচাগারগুলোর পাশেই শ্রেণিকক্ষ। এ কারণে সমস্যাও বেশি। দুর্গন্ধে শ্রেণিকক্ষে ভালোভাবে মনোযোগ দেওয়া যায় না। এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্য থেকে ক্লাস করা দুষ্কর। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনারদের প্রধান মিলন বলেন, এখানে একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে ৩০০ শৌচাগার রয়েছে। পুরো বিশ্ববিদ্যালয় পরিষ্কার রাখার জন্য ১৩ জন নিয়মিত ও ছয়জন দৈনিক হাজিরাভিত্তিক কর্মী রয়েছেন। আমাদের পুরো ক্যাম্পাস পরিষ্কার রাখতে হয়। অল্পসংখ্যক কর্মী দিয়ে শৌচাগারগুলো পুরোপুরি পরিষ্কার রাখা সম্ভব নয়। এ জন্য জনবল বাড়াতে হবে। তারপরও আমরা নিয়মিত শৌচাগার পরিষ্কার করি। তার দাবি, দরজা এবং পানির ট্যাপ নষ্ট থাকায় অধিকাংশ শৌচাগার ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আমরা এগুলো ঠিক করার জন্য প্রকৌশল অধিদফতরে একাধিকবার চিঠি পাঠিয়েছি। এখন পর্যন্ত ওই দফতর থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী কাজী ইউনুস আলী বলেন, শৌচাগারগুলোর দরজা এবং পানির ট্যাপ নষ্টের বিষয়টি জানতে পেরেছি। টেন্ডার না হওয়া পর্যন্ত কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শদাতা ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসাইন্স বিভাগের চেয়ারম্যান শরাফত আলী বলেন, এখানে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর অভাব রয়েছে। এ কারণে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এটি সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে আমরা শৌচাগারগুলো নিয়মিত পরিষ্কার রাখার ব্যবস্থা করছি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর