পাঁচ বছর আগে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা নুরুল আলম নুরুর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করা হয়েছে। আবেদনে বর্তমান রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এবং চট্টগ্রাম জেলার সাবেক পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা, রাউজান থানার সাবেক ওসি কেফায়েত উল্লাহ এবং এসআই শেখ মো. জাভেদকে অভিযুক্ত করা হয়। গতকাল চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমেদ ভুইয়ার আদালতে মামলার আবেদন করেন কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতা মিজানুর রহমান। পরে আদালত আবেদনটি খারিজ করে দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইখতেখার সাইমুল বলেন, ‘তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হত্যা ও নির্যাতনের অভিযোগ এনে মামলা দায়েরের আবেদন করা হয়। আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেন।’
বাদীর আইনজীবী আবদুস সাত্তার বলেন, ‘বিএনপির কেন্দ্রীয় সেলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিগত সময়ে দলের যেসব নেতা-কর্মী পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যুর শিকার হয়েছে, প্রত্যেকটি ঘটনায় মামলা দায়ের হবে।’অভিযোগের বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নুরে আলম মিনা বলেন, ‘অভিযোগের সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতেই পুলিশের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’
নালিশি মামলার আবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে- অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা পরিকল্পিতভাবে নুরুকে বাসা থেকে তুলে রাউজানের নোয়াপাড়া কলেজ মাঠে নিয়ে যায়। রাত ৩টা পর্যন্ত অমানুষিক নির্যাতন করে এবং পরে মাথায় গুলি করে হত্যা করে লাশ বাগোয়ান ইউনিয়নের কোয়েপাড়া ঠেলারঘাটে কর্ণফুলী নদীর তীরে ফেলে দেন। আবেদনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু অপরাধ আমলে নেওয়ার আরজি জানিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়েছেন বাদী।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ কর্ণফুলী নদীর তীর থেকে নুরুল আলম নুরুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ জানিয়েছিল- নুরুর মাথায় গুলি এবং শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। হাত-পা রশি দিয়ে ও শার্ট দিয়ে চোখ বাঁধা অবস্থায় লাশ পাওয়া যায়। মুখের ভিতর ওড়না ঢোকানো পাওয়া যায়। তখন পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছিলেন, ২৯ মার্চ রাত ১২টার দিকে সাদা পোশাকের কয়েকজন নুরুকে নগরীর চন্দনপুরা এলাকার বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়। তখন পুলিশের দাবি ছিল নগরীতে তারা কোনো অভিযান চালায়নি। নুরুকে গ্রেফতার করা হয়নি।
