শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

মহিলা সমিতিতে ‘তামাশা’

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

নাটক সরণিখ্যাত বেইলি রোডের মহিলা সমিতি মিলনায়তনে মঞ্চায়ন হলো চন্দ্রকলা থিয়েটারের প্রযোজিত হাসির নাটক ‘তামাশা’। ১১ দিনের গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসবের সপ্তম দিনে গতকাল সন্ধ্যায় মঞ্চায়ন হয় নাটকটি।

একটি প্লটে দুটি বাড়ি। এর মধ্যে একটির মালিক টুন্ডা হাজি, যার রয়েছে ভাঙারির ব্যবসা। আর্থিক অবস্থা ভালো বলে যৌবনেই হজ করেছেন। কেউ অন্যায় করলে তাকে মেরে হাত-পা ভেঙে দিত বলেই তার নাম টুন্ডা হাজি। তার একমাত্র মেয়ে লাইলী। সিনেমা দেখা ও ফ্যাশন করা তার কাজ। টুন্ডা হাজির বোন নুরজাহান। আর আছে টুন্ডা হাজির অদ্ভুত এক পিএস। আরেক বাড়ির প্রধান মঞ্জিলা বেগম খুবই রাগী। তার রয়েছে স্বর্ণের ব্যবসা। স্বামী চাঁন মিয়া ঘরজামাই থাকে। ঘরজামাই বলে তার কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়ার অধিকার নেই। মঞ্জিলা বেগমের একমাত্র ছেলে বাবুল। বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়াই হলো তার কাজ। মঞ্জিলা বেগমেরও আছে এক অদ্ভুত পিএস। মঞ্জিলা বেগমের একমাত্র ভাই ইউনুছ। একটি দেয়াল বাড়ি দুটিকে আলাদা করেছে। টুন্ডা হাজির সঙ্গে মঞ্জিলা বেগমের পাঁচ বছর আগে ঝগড়া হয়েছিল। তা অলংকৃত হয়েছিল নুরজাহান ও ইউনুছের প্রেমের কারণে। মূল কারণ ছিল অর্থনৈতিক দ্বন্দ্ব।

তারপর নাটকীয়ভাবে পঞ্চায়েতের বিচারে দুজনকে আলাদা করে দেওয়া হয়। সে থেকেই ইউনুছ সৌদি আরব থাকে। এদিকে, বাবুল আর লাইলীর প্রেম হয়। যা বুঝে ফেলে দুই পরিবারের প্রধানরা। এর মাঝে চলে আসে ইউনুছ। ঘটনা মোড় নেয় অন্যদিকে। ঘটনাক্রমে ইউনুছ আবার দুর্বল হয়ে পড়ে নুরজাহানের প্রতি। একাধিক ঘটনায় আরও জটিলতা তৈরি হয়। ইউনুছ, বাবুল, নুরজাহান, লাইলী সিদ্ধান্ত নেয় তাদের বাবা-মাকে অপহরণ করবে। টুন্ডা হাজি ও মঞ্জিলা বেগমের দুই পরিবারে সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যায় ‘তামাশা’ নাটকের কাহিনি।

বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন- এইচ আর অনিক, মাহমুদুল হাসান মাসুম, এস এম অঙ্গন, মলি, অবনী, রুনা, পপি, আনিস, গোলাম সারোয়ার, সৈকত, নাহিয়ান, শুভ, রিয়াজ, সুজন মজুমদার, মো. ইউসুফ হোসাইন প্রমুখ।

একই সময়ে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চায়ন হয় প্রাঙ্গণেমোর প্রযোজিত ‘আওরাঙ্গজেব’। পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় গৌতম হালদার নির্দেশিত ও অভিনীত ভারতের নয়ে নাটুয়া নাট্যদলের ‘মরমিয়া মন’। স্টুডিও থিয়েটার হলে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নাট্য সংসদ প্রযোজিত শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘বিলাসী’।

একাডেমির সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে আবৃত্তি প্রযোজনা ‘ছড়ায় ছড়ায় প্রেম’ পরিবেশন করে বৈকুণ্ঠ আবৃত্তি একাডেমি। নৃত্যালেখ্য ‘সম্প্রীতির বাংলাদেশ’ পরিবেশন করে একাডেমি অব ফাইন আর্টস।

এর আগে, বিকালে জাতীয় নাট্যশালার লবি প্রাঙ্গণের উন্মুক্ত মঞ্চের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পথনাটক পরিবেশন করে গাজীপুরের নাটকের দল নাট্যভূমি। শিশুদের পরিবেশনায় অংশ নেয় সুরতাল শিশুদল ও ঋদ্ধস্বরের শিশুরা। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি একাডেমি। দলীয় সংগীত পরিবেশন করে সপ্তরেখা ও উঠোন। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে জাগো আর্ট সেন্টার ও বাফা। একক সংগীত পরিবেশন করেন পল্লব গোমেজ, তামান্না নিগার তুলি ও নবীন কিশোর গৌতম। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন  সূবর্ণা আরফিন ও অনিকেত রাজেশ।

৩১ অক্টোবর শেষ হবে গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব পর্ষদ আয়োজিত ১১ দিনের এই উৎসব। 

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর