সোমবার, ৭ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন

আওয়ামী লীগে সংকট, জাপায় স্বস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

আওয়ামী লীগে সংকট, জাপায় স্বস্তি

রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ার কথা আজ ৭ নভেম্বর। তফসিল ঘোষণার পর আচরণবিধির কারণে প্রার্থীদের বড় ধরনের শোডাউনসহ অনেক কিছুই সীমিত হয়ে পড়বে। এ কারণে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থীরা বড় ধরনের শোডাউনে ব্যস্ত রয়েছেন। গতকাল বিকালে জাপার বর্তমান মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা মোটরসাইকেলে শোডাউন করেছেন। বিকালে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিউর রহমান সাফি নাগরিক সংলাপ করে নিজেকে প্রার্থী হিসেবে জানান দিয়েছেন। এর আগে আওয়ামী লীগের আরেক মেয়র পদপ্রত্যাশী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রায় ১০০টি নৌকা নিয়ে শোডাউন করেছেন। এদিকে নির্বাচন বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আওয়ামী লীগের পদপ্রত্যাশীরা যদি ঐক্যবদ্ধ না থাকে তাহলে নৌকা সংকটে পড়বে। অন্যদিকে জাতীয় পার্টির একজন প্রার্থী হওয়ায় দলটি রয়েছে দারুণ স্বস্তিতে। 

জানা গেছে, মনোনয়ন দেওয়ার আগ পর্যন্ত নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগের ১০ জনের বেশি প্রার্থী মাঠপর্যায়ে কাজ করেছেন। তারা বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ করে মেয়র পদে নিজেকে জানান দিয়েছেন। দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা একজনকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেবেন। মনোনয়নের ঘোষণার পর পরই মনোনয়ন বঞ্চিতরা সবাই নৌকা মার্কার পক্ষে কাজ না করলে বিগত নির্বাচনের মতো এবারও নৌকার ভরাডুবি হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীদের দাবি, নৌকা মার্কাকে বিজয়ী করতে হলে দলের নেতাদের সঙ্গে আগে থেকেই সমন্বয় করে কাজ করতে হবে।

জাতীয় পার্টির একক প্রার্থী বর্তমান মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা ও তার দলের নেতা-কর্মীরা রয়েছেন চাঙা। জাপার একাধিক নেতা বলেন, বিগত নির্বাচনে ১ লাখের বেশি ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হেরেছিলেন। এবারও আওয়ামী লীগের মধ্যে ঐক্য হবে না এটা ধরে নেওয়া যায়। লাঙলের বিজয় সুনিশ্চিত বলে মনে করছেন জাপার নেতা-কর্মীরা। তাই সিটি নির্বাচন ঘিরে জাতীয় পার্টি স্বস্তিতে রয়েছে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের অনেক আগেই বর্তমান মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে মনোনয়ন দিয়ে রেখেছেন। এদিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত এবং প্রার্থী নির্ধারণ কোনোটাই এখন পর্যন্ত বিএনপি করতে পারেনি। তবে বিএনপির একাধিক প্রার্থী মেয়র পদে লড়ার জন্য মাঠে রয়েছেন। আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জি এম সাহতাব উদ্দিন বলেন, তফসিল ঘোষণার পর পরই তারা কাজ শুরু করবেন।

মেয়র পদে মনোনয়নপ্রত্যাশী, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিউর রহমান সাফি বলেন, মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাদের নিয়ে মাঠপর্যায়ে কাজ করতে হবে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সিটি করপোরেশন রংপুর। এই সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন বিচ্ছিন্নভাবে করলে সেই সুফল নাগরিকরা পাবে না বরং নাগরিক দুর্ভোগ বাড়বে। এ জন্য চাই একজন নগরবিদ দিয়ে শত বছরের জন্য পরিকল্পনা করে উন্নয়ন করা।

জেলা সুজনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন বলেন, স্থনীয় সরকার নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও অবাধ সুষ্ঠু করতে হবে। রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ২৭ ডিসেম্বর। এই নির্বাচনে দলীয় প্রভাব থাকতেই পারে। তবে দলীয় প্রভাবের বাইরে থেকে নির্বাচন করতে পারলে নির্বাচন কমিশনের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন কতটুকু সফল হবে এটা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তিনি আশা করেন, সিটি নির্বাচন দলীয় ও সরকারের প্রভাবমুক্ত থাকবে।

সাবেক পৌর চেয়ারম্যান ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কাজী মো. জুননুন বলেন, সিটি করপোরেশনের আয়তন বেড়েছে। আগে ১৫টি ওয়ার্ড ছিল। এখন ৩৩টি। সেই হিসেবে নতুন ওয়ার্ডগুলোতে উন্নয়ন হয়নি। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিতে হবে। এক্ষেত্রে ভোটারদের সঠিক চিন্তা-ভাবনা করে ভোট দেওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।

সর্বশেষ খবর