শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে দ্বার খুলছে হৃদরোগের বিশেষায়িত চিকিৎসার

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

ঢাকায় বাংলাদেশ ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৭৮ সালে। অথচ স্বাধীনতার পর ৫২টি বছর পার হলেও বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে একটি বিশেষায়িত হৃদরোগ চিকিৎসা কেন্দ্র গড়ে ওঠেনি। তবে বিলম্বে হলেও চট্টগ্রাম হার্ট ফাইন্ডেশন হাসপাতাল চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল থেকে নগরের ওআর নিজাম রোডে ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে বহির্বিভাগে হৃদরোগীদের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম শুরু হবে। এর মাধ্যমে চট্টগ্রামে হৃদরোগের আধুনিক ও বিশেষায়িত চিকিৎসার দ্বার খুলছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ উপলক্ষে আজ বিকাল ৪টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ডা. শাহ আলম বীর উত্তম মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। জানা যায়, চট্টগ্রাম অঞ্চল হৃদরোগপ্রবণ এলাকা। এর প্রধান কারণ এ অঞ্চলের মানুষের খাদ্যাভ্যাস। আর বৃহত্তর চট্টগ্রামের হৃদরোগীদের একমাত্র ভরসা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল। হাসপাতালে ১৯৮৯ সালে ৬০ শয্যা নিয়ে হৃদরোগ বিভাগ চালু হয়। পরে রোগীর চাপে তা ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। কিন্তু প্রতিনিয়তই এখানে তিনগুণ বেশি রোগী ভর্তি থাকে। ফলে ওয়ার্ডে ফ্লোরসহ নানাভাবে চিকিৎসা নিতে হয় রোগীদের। চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশনের মহাসচিব ও চমেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. প্রবীর কুমার দাশ বলেন, ভৌগোলিকসহ নানা কারণে বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষ হৃদরোগের উচ্চ ঝুঁকিতে।

 কিন্তু এর প্রতিকার ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিতান্তই অপ্রতুল। তাছাড়া চমেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের ওপর বৃহত্তর চট্টগ্রামের প্রায় ৪ কোটি মানুষ নির্ভরশীল। বেসরকারি পর্যায়ে সেবা কেন্দ্র থাকলেও সেখানে চিকিৎসকসহ পূর্ণাঙ্গ হৃদরোগ সুবিধা অনুপস্থিত। ফলে চমেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগটি রোগীর ভারে ন্যুজ।

তিনি বলেন, হার্ট অ্যাটাকের অন্তত এক তৃতীয়াংশ রোগীই হঠাৎ মৃত্যুবরণ করে। তারা হাসপাতালের সিসিইউ পর্যন্ত পৌঁছানোর আগেই মারা যায়। আরও এক তৃতীয়াংশ অবস্থানগত, আর্থিক ও অন্যান্য কারণে হাসপাতালে পৌঁছাতে পারে না। তাই অধিকাংশ হার্ট অ্যাটাকের রোগী চিকিৎসাসেবা নিতে অপারগ। তাদের হার্ট অ্যাটাকের ছোবল থেকে রক্ষা করতে হলে প্রতিরোধই একমাত্র উপায়। তাছাড়া, হৃদরোগের ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান যেমন- ধূমপান, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, রক্তের উচ্চ কোলেস্টেরল, মেদ বাহুল্য প্রতিরোধ ও তার উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে হৃদরোগ তথা হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ সম্ভব। সবকিছু বিবেচনায় রেখে চট্টগ্রাম হার্ট হাসপাতালে প্রাথমিকভাবে বহির্বিভাগে সেবা শুরু করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে আধুনিক হৃদরোগ সেবা যোগ করা হবে। 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর