মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

মোড়ে মোড়ে ‘ভোঁ দৌড় পার্টি’ আতঙ্ক

► নগরীর কমপক্ষে ২৫ পয়েন্টে তৎপর ► এসব মোবাইল চলে যায় পার্শ্ববর্তী দেশে

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরীর ব্যস্ততম এলাকা নিউমার্কেট মোড়। এই এলাকা দিয়েই চলাচল করে কয়েকটি রুটের গণপরিবহন। জনসমাগম থাকায় এখানে স্বাভাবিকের চেয়ে কম গতিতে চলাচল করে গণপরিবহন। আর গাড়ির গতি কম থাকার সুযোগকেই ‘মোয়া’ হিসেবে নিচ্ছে মোবাইল ফোন ছিনতাইকারী চক্র। এ চক্রের সদস্যরা গণপরিবহনের জানালা দিয়ে একের পর এক মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে দেয় ভোঁ দৌড়। শুধু নিউমার্কেট মোড় নয়, চট্টগ্রাম নগরীর কমপক্ষে ২৫ পয়েন্টে প্রতিদিনই ঘটছে অভিন্ন কায়দায় মোবাইল ছিনতাই। এ চক্রের সদস্যরা ছোঁ মেরে মোবাইল নিয়ে ভোঁ দৌড় দেয় বলে লোকজন তাদের নাম দিয়েছে ‘ভোঁ দৌড় পাটির্’। সিএমপির মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপকমিশনার পংকজ দত্ত বলেন, ‘মোবাইল চোর সিন্ডিকেটগুলোর বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। প্রায়ই গ্রেফতার হয় মোবাইল চোরদের কেউ না কেউ। স্পটভিত্তিক চুরি বা ছিনতাই রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ সংশ্লিষ্টরা জানান, ট্রাফিক সিগন্যাল কিংবা যানজটের কারণে কোনো গণপরিবহন বা রিকশা গতি কমিয়ে এলেই যাত্রীর হাত থেকে মোবাইল নিয়ে পালিয়ে ভোঁ দৌড় পার্টির সদস্যরা যায় পাশের গলিতে। এ চক্রের তৎপরতা রয়েছে এমন স্পটগুলোর মধ্যে নগরীর শাহ আমানত সেতু, কালুরঘাট ব্রিজ শহরের অংশ, কামাল বাজার, এক কিলোমিটার, বহদ্দারহাট মোড়, মুরাদপুর, জিইসির মোড়, টাইগারপাস, দেওয়ানহাট, আন্দরকিল্লাহ মোড়, কোতোয়ালি মোড়, নিউমার্কেট, স্টেশন রোড, চৌমুহনী, আগ্রাবাদ মোড়, বারিক বিল্ডিং,  নিমতলা, সল্টগোলা ক্রসিং, সিমেন্ট ক্রসিং, ইপিজেড মোড়, কাটঘর মোড়, প্রবর্তক মোড়, গোল পাহাড় মোড় অন্যতম। এ চক্রের সদস্যরা ছিনতাই করা এসব মোবাইল ফোন বিক্রি করে অন্য একটি চক্রের কাছে। ওই চক্রের সদস্যরা নগরীর রিয়াজুদ্দিন বাজার, আগ্রাবাদ এবং ইপিজেড এলাকার একটি সিন্ডিকেটের কাছে এসব চোরাই মোবাইল বিক্রি করে। তারা এর মধ্যে কম দামি মোবাইল ফোনগুলোর যন্ত্রাংশ খুলে মেকানিকদের কাছে বিক্রি করে।

আর দামি সেটগুলো লাগেজ পার্টির মাধ্যমে পাঠিয়ে দেয় পাশর্^বর্তী দেশ ভারত এবং মিয়ানমারে। সম্প্রতি নগরীর মুরাদপুর এলাকায় অভিন্ন কায়দায় মোবাইল ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন হাটহাজারীর এলাকার আবদুল হামিদ নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘বাসের জানালার পাশে বসে মোবাইলে কথা বলছিলাম। হঠাৎ এক কিশোর জানালা নিয়ে মোবাইলটি টান দিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। শুনেছি, এ মোড়ে প্রতিদিনই পাঁচ থেকে দশটা মোবাইল ছিনতাই হয়।’

ওই এলাকার এক ভ্রাম্যমাণ দোকানদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কয়েকজন পথশিশু ও কিশোর এসব মোবাইল ছিনতাইয়ে জড়িত। জড়িতদের সবাই নেশাগ্রস্ত। তারা নেশার টাকা জোগাড় করতেই ছিনতাই করে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর