শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

দুই রাজস্ব কর্মকর্তার ঘুষ নিয়ে দর-কষাকষির ভিডিও ভাইরাল

মাদারীপুর প্রতিনিধি

মাদারীপুরে দুই রাজস্ব কর্মকর্তা সম্প্রতি এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে ঘুষ নিয়ে দরকষাকষি করেন। এই দরকষাকষির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অভিযুক্তরা হলেন- কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগ মাদারীপুর সার্কেলের রাজস্ব কর্মকর্তা (সার্কেল-১) মো. ইমরান কবীর ও (সার্কেল-২) রফিকুল ইসলাম। তবে অভিযুক্ত দুই রাজস্ব কর্মকর্তা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অভিযোগ রয়েছে, মাদারীপুর কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অফিসে ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ হয় না। দীর্ঘদিন ধরেই এখানকার ব্যবসায়ীরা জিম্মি এসব অফিসারদের কাছে। ক্ষুব্ধ ওই ব্যবসায়ী ঘুষ দিয়ে সেই ভিডিও রেকর্ড করে রাখেন। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ঘুষের টাকা নগদ লেনদেন করছেন। দুই রাজস্ব কর্মকর্তা ওই ব্যবসায়ীকে চাহিদা মতো প্রতি মাসে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঘুষ পরিশোধ করার জন্য হুমকিও দেন। ভিডিওতে দেখা যায়, রাজস্ব কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম ওই ব্যবসায়ীকে বলছেন, ‘এইডা কি আনছেন?’ এ সময় কয়েকটি ৫০০ টাকার নোট নিতে দেখা যায় তাকে। টাকাগুলো গুনে নিজের পকেটে নিয়ে ওই ব্যবসায়ীকে রফিকুল বলেন, ‘কী যে করেন আপনারা? মানে... মাদারীপুরের লোক এত ধনী, দেশের মধ্যে তৃতীয় ধনী জেলা। আপনারা কেন এমন করেন?’

কিছুক্ষণ পরে সার্কেল-২ রাজস্ব কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যা দিছেন আমি এটা নিতে পারব না। ইমরান সাহেবকে কী দেব? আমি কীভাবে বুঝাবো? স্যারে তো বকবো! আমি এটা নিতে পারবো না। এই ৩ (তিন হাজার) আমি নিতে পারবো না। বাকিটা কখন দেবেন? আপনারা স্যারকে বলে যান, দেখা করে যান। কারণ, তিনি (ইমরান কবীর) আপনার অরিজিনাল স্যার। সেই আপনাকে বাঁচাতে পারবো, মারতে পারবো। বুঝচ্ছেন!’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রতি মাসে অফিস খরচ ১ হাজার টাকা দিয়ে যাবেন। এটা যেন আর না বলা লাগে। কথা যেন নড়চড় না হয়। মাসের ১০ তারিখের মধ্যে টাকা আমার কাছে দিয়ে যাবেন। ’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, কাস্টমস অফিস থেকে প্রতি মাসে লোক গিয়ে ২০/৩০ হাজার টাকা দাবি করে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঘুষ দিলেই ভ্যাটের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। আর না দিলে অতিরিক্ত টাকা ধার্য করে।

এ ব্যাপারে রাজস্ব কর্মকর্তা (সার্কেল-১) মো. ইমরান কবীর বলেন, ‘ভিডিওটি আমাদের নয়, এটি সাজানো।’

রাজস্ব কর্মকর্তা (সার্কেল-২) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ওই ব্যবসায়ী আমার কাছে আসার পর তাকে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে টাকা জমা দিতে বলেছিলাম। আমি তাকে চালান লিখেও দিয়েছিলাম। এর বেশি কিছু নয়।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর