রবিবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

ঐতিহ্যের ‘পলো বাওয়া’ উৎসব

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

ঐতিহ্যের ‘পলো বাওয়া’ উৎসব

এক সময় পলো দিয়ে মাছ ধরা বেশ জনপ্রিয় ছিল গ্রামীণ সমাজে। বিশেষ করে পৌষ-মাঘ মাসে বিল বা উন্মুক্ত জলাশয়ে দল বেঁধে মাছ ধরা হতো। যাকে বলা হয় ‘পলো বাইছ’ বা ‘পলো উৎসব’। জলাশয় শুকিয়ে যাওয়ায় এবং কালের পরিক্রমায় এখন সেই ‘পলো বাইছ’ হারিয়ে গেছে। তবে এখনো হারানো সেই ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রেখেছেন হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের আতুকুড়া গ্রামবাসী। এরই ধরাবাহিকতায় গতকাল সকাল  থেকে দুপুর পর্যন্ত ‘বড়আন’ বিলে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘পলো বাওয়া’ উৎসব। যা বিলের পাড়ে দাঁড়িয়ে উপভোগ করেছেন শত শত গ্রামবাসী। এ উৎসবে শুধু আতুকুড়া গ্রামবাসীই নয়, মাছ ধরতে ভোর থেকেই বিলের পাড়ে জড়ো হতে থাকে জেলার বিভিন্ন প্রাপ্ত থেকে আসা সৌখিন মাছ শিকারিরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীত উপেক্ষা করে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ‘বড়আন’ বিলে আসতে থাকেন শত শত সৌখিন মাছ শিকারি।

 সকাল ১০টা বাজতেই কোমড়ে ও মাথায় গামছা বেঁধে পলো নিয়ে মাছ শিকারে ঝাঁপিয়ে পড়েন নানা বয়সের মানুষ। পাশাপাশি হাতাজাল, উড়াল জালসহ নানা ধরনের মাছ ধরার ফাঁদ নিয়ে হইহুল্লোড়ে মেতে ওঠেন সবাই। দুপুর পর্যন্ত চলা এ উৎসবে শিকারিদের হাতে ধরা পড়ে বোয়াল, আইড়, শোলসহ নানা প্রজাতির দেশীয় ছোট-বড় মাছ। অনেকেই মাছ ধরতে না পারলেও গ্রাম বাংলার হারানো এমন উৎসবে অংশ নিতে পেরেই খুশি।

তবে মাছ ধরতে আসা সৌখিন শিকারিরা বলেন, এক সময় জেলার বিভিন্ন বিলে প্রতিবছর পৌষ থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত ‘পলো বাওয়া’ উৎসবের আয়োজন করা হতো। কিন্তু দিন দিন নদী ও বিল ভরাট এবং দখল হওয়ার কারণে হারাতে বসেছে গ্রাম-বাংলার প্রাচীন এ ঐতিহ্য। মাছ ধরার উৎসবকে বাঁচিয়ে রাখতে নদী ও বিল রক্ষার দাবি মাছ শিকারিদের।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ও আয়োজক কমিটির সদস্য সুমন আখঞ্জি বলেন, আমরা প্রতি বছর বড়আন বিলে ‘পলো বাওয়া’ উৎসবের আয়োজন করে থাকি। এটা গ্রামবাংলার একটি ঐতিহ্য। প্রতি বছরই এমন আয়োজন করতে পেরে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি আমরাও খুশি।

এদিকে, মাছ ধরা উৎসব শেষে অনেককেই দেশীয় প্রজাতির নানা ধরনের ছোট-বড় মাছ নিয়ে আনন্দে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে। অনেক আবার বিলের পাড়েই মাছ বিক্রি করেছেন।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর