বৃহস্পতিবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

এমএলএমের ফাঁদে নিঃস্ব হাজারো মানুষ

হোতাসহ ১১ জন র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার ও পরিবেশ উন্নয়ন’ নামে একটি সংস্থার আড়ালে চলা মাল্টি লেভেল মার্কেটিং বা এমএলএম ব্যবসার ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। মানবাধিকার সংস্থার আড়ালে থাকা এই চক্রটি কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বাড্ডা এলাকা থেকে চক্রের হোতাসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। তারা হলেন- চক্রের হোতা আবদুল কাদের (৪৪), তার সহযোগী মির্জা নাসির উদ্দিন (২৫), মাহফুজুর রহমান (৫০), এ আর আবদুল মোমেন (৪৯), মেহেদী হাসান (২৫), আমজাদ হোসেন (৩৪), মঞ্জুরুল হাসান খান (৩৫), আবদুল বারিক (৩৮), রুহুল আমিন (২৫), মুন্নি (৩০) এবং নিলুফা ইসলাম নিপা (৩৪)। তাদের কাছ থেকে একজন ভিকটিম, চারটি কম্পিউটার, চারটি ল্যাপটপ, ১৭টি মোবাইল, বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই, ভাউচার, চুক্তিনামা, প্যাড, সিল, নগদ টাকা জব্দ করা হয়। গতকাল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন। তিনি বলেন, ঢাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন ধরে মানবাধিকার ও পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থার আড়ালে এমএলএম ব্যবসার নামে প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করে। চক্রটি মূলত সমাজের নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে মধ্যবিত্তদের টার্গেট করে মাসিক ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতনে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সংস্থাটির দাতা সদস্য বানানোর কথা বলে অনুদান হিসেবে জনপ্রতি ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিত। এরই মধ্যে প্রায় সহস্রাধিক মানুষের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চক্রটির হোতা আবদুল কাদের র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন- কাজের নামে দাতা সদস্যদের দিয়ে এমএলএম আদলে নতুন দাতা সদস্য সংগ্রহের কাজ করাতেন তিনি।

আর ভুক্তভোগীদের বলা হতো ৩০ হাজার টাকা দিয়ে দাতা সদস্য হওয়ার পর বেতন ১০ হাজার টাকা হবে। কাজ হিসেবে এলাকায় বাল্যবিবাহ হলে, কোনো দরিদ্র পরিবার অর্থাভাবে মেয়ে বিয়ে দিতে না পারলে এবং নদীতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু তোলা হলে সংস্থাটির কর্মকর্তাদের জানাতে বলা হতো। এমন সহজ চাকরির আশায় ৩০ হাজার টাকা দিয়ে দাতা সদস্য হওয়ার পর তাদের জানানো হতো নতুন দাতা সদস্য আনতে হবে। নতুন সদস্য আনতে না পারলে বেতন হবে না। অথচ চক্রটি টাকা নেওয়ার আগে লোক সংগ্রহের বিষয়ে কিছুই বলত না। ভুক্তভোগীরা টাকা দিয়ে প্রতারিত হয়ে বেতন না পেয়ে রাজধানীর মধ্যবাড্ডায় সংস্থার অফিসে গেলে তাদের মামলা দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করার ভয় দেখানো হতো।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর