মঙ্গলবার, ৭ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা
পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি

জামিন হয়নি সাত খেলোয়াড়-কোচের

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

পুলিশ সদস্যের সঙ্গে হাতাহাতির মামলায় গ্রেফতার হওয়া ছয় খেলোয়াড় ও কোচের জামিন হয়নি। তবে বয়স বিবেচনায় ১২ জনের মধ্যে ‘অপ্রাপ্তবয়স্ক’ পাঁচ খেলোয়াড়কে জামিন দিয়েছেন আদালত। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে রাজশাহী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক পাঁচজনকে জামিন দেন। এর আগে রবিবার রাতেই কারাগারে পাঠানো হয় ছয় খেলোয়াড় আলী আজম (১৯), আকাশ আলী মোহন (২০), রিমি খানম (১৯), পাপিয়া সারোয়ার ওরফে পূর্ণিমা (১৯), মোছা. দিপালী (১৯) ও সাবরিনা আক্তার (১৯) এবং তাদের কোচের আহসান কবীরকে (৪৫)। রবিবার ঢাকা থেকে রাজশাহী ফেরার পথে ট্রেনে পুলিশ সদস্য গোলাম কিবরিয়ার (৩০) সঙ্গে যুব গেমসে অংশ নেওয়া ওই খেলোয়াড়দের হাতাহাতি হয়। এ ঘটনায় ওই পুলিশ সদস্যের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা রেলওয়ে থানায় মামলা করেন। এরপর রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ১১ খেলোয়াড় ও তাদের কোচকে গ্রেফতার করা হয়। রবিবার রাত ৮টার দিকে আদালতে নেওয়া হলে ছয় খেলোয়াড় ও কোচকে ভারপ্রাপ্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. লিটন হোসেন কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

অপ্রাপ্তবয়স্ক পাঁচ খেলোয়াড়কে রাতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এ তোলা হলে তাদের সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়া হয়। আর প্রাপ্তবয়স্ক ছয় খেলোয়াড় ও কোচের জামিন আগের দিনই নামঞ্জুর হয়েছে। গতকাল তাদের জামিন আবেদনের শুনানি হয়নি। ১১ খেলোয়াড়ের মধ্যে তিনজন ছেলে ও আটজন মেয়ে।

আদালত চত্বরে উপস্থিত ছিলেন খেলোয়াড় রিমি খানমের (১৯) মা ফিরোজা বেগম। তিনি বলেন, যারা খেলতে গিয়েছিলেন সবাই হতদরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়ে। তার মেয়ে রিমি খানম এবার এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার পড়াশোনা আছে। ১৮ মার্চ  ভারতে খেলা আছে। তিনি বলেন, এ মামলা থাকলে তার মেয়ের ক্যারিয়ার নষ্ট হয়ে যাবে। পড়াশোনাটাও নষ্ট হবে। রিমি খানম সেনাবাহিনীর হয়ে খেলতে গিয়েছিল। সে তিনজনকে হারিয়ে সোনা জিতেছে উল্লেখ করে ফিরোজা বেগম বলেন, তার মেয়েসহ সবার পুরস্কারের টাকা ও মেডেল একটা ব্যাগে ছিল। সেই ব্যাগ হারিয়ে গেছে। ওরা খোঁজাখুঁজি করছিল। নামার সময় ওই পুলিশের সঙ্গে নাকি ধাক্কা লেগেছে। আমাদের ছেলে আলী আজম সঙ্গে সঙ্গে সরি বলেছে। তারপরও পুলিশ ওর কলার ধরে একটা চড়ও মেরেছে। এই নিয়ে আবার মামলা করেছে।

এই খেলোয়াড়রা জুডো, কুস্তি, কারাতেসহ বিভিন্ন খেলায় অংশ নিয়ে থাকেন। রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকায় তাদের বাড়ি। মামলায় মো. রমজান (১৯) নামের আরেক খেলোয়াড়কেও আসামি করা হয়েছে। তবে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ওয়াহেদুন্নবী অনু বলেন, এমন ঘটনার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে ক্রীড়াঙ্গনে।

পুলিশ কনস্টেবল গোলাম কিবরিয়ার বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ীর প্রেমতলী খেতুর গ্রামে। তিনি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কর্মরত। মামলায় অভিযোগ করা হয়, স্ত্রী রাজিয়া সুলতানাকে নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন গোলাম কিবরিয়া। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে তাকে মারধর করে খেলোয়াড়দের দলটি। এরপর রাজশাহী রেলওয়ে থানা-পুলিশ সবাইকে থানায় নিয়ে যায়। মামলায় তার স্ত্রী দাবি করেন, স্বামীকে মারধরের সময় তার গলার চেইন চুরি করে নেওয়া হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর