বুধবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

খেলার সুযোগবঞ্চিত ১০ লাখ শিক্ষার্থী

রংপুরে মাঠ নেই অর্ধেক বিদ্যালয়ের

নজরুল মৃধা, রংপুর

রংপুর বিভাগের আট জেলায় প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থী খেলার সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। খেলাধুলা শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের অন্যতম মাধ্যম হলেও মাঠ না থাকায় শিক্ষার্থীদের প্রতিভা বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। রংপুর বিভাগে ৯ হাজার ৫৩৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী রয়েছে ১৯ লাখের বেশি। এর মধ্যে ৪ হাজারের বেশি বিদ্যালয়ে খেলার মাঠ নেই। তবে শিক্ষা অফিস বলছে প্রতিটি বিদ্যালয়ে খেলাধুলার ব্যবস্থা রয়েছে। যাদের নিজস্ব মাঠ নেই তারা পার্শ্ববর্তী মাঠে খেলাধুলা করছে। নদী বা পুকুরের কারণে যদি বিদ্যালয়ের কাঠামো ক্ষতির সম্মুখীন হয় সে ক্ষেত্রে জমি অধিগ্রহণের নিয়ম থাকলেও খেলার মাঠের জন্য জমি অধিগ্রহণের কোনো নিয়ম নেই। অভিভাবক ও সচেতন মহল খেলার মাঠের জন্য জমি অধিগ্রহণের আইন চান।

শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি বিদ্যালয় রয়েছে দিনাজপুর জেলায় এবং সবচেয়ে কম বিদ্যালয় রয়েছে পঞ্চগড় জেলায়। গ্রামাঞ্চলের অনেক বিদ্যালয়ে খেলার মাঠ থাকলেও শহরের বিদ্যালয়গুলোয় খেলার মাঠ নেই বললেই চলে। নগরীর ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে শালবন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে বিদ্যালয়ের যেটুকু জমি রয়েছে তা ভবন নির্মাণে শেষ হয়েছে। বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান কিংবা খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করতে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষাথীদের বাইরের মাঠে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিতে হচ্ছে। শালবন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্র্থী রফিকুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতার আগে এ স্কুলের সামনে যতটুকু জায়গা ছিল সেখানে আমরা ফুটবল ও ভলিবল খেলতাম। স্বাধীনতার পরের প্রজন্মও এ স্কুলের সামনে খেলাধূলা করেছে। এখন ভবন নির্মাণের ফলে বিদ্যালয়ের সামনের জায়গা সংকুচিত হয়ে পড়েছে। ফলে খেলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। রংপুর নগরীর দক্ষিণ মুলাটোল সরকারি বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে সেখানেও ভবন নির্মাণের পর খেলার মাঠ নেই। ওই বিদ্যালয়ের কয়েকজন অভিভাবক জানান, অনেক বিদ্যালয় রয়েছে কিছু জমি মাটি ভরাট করলে খেলার মাঠ তৈরি করা সম্ভব। গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ বিদ্যালয় দানকৃত জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে অধিকাংশ বিদ্যালয়ের জমি এক বিঘার ওপরে। তাই ওইসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কিছুটা খেলাধুলার সুযোগ পাচ্ছে। অপরদিকে শহরে জমির দাম বেশি হওয়ায় দানকৃত জমির পরিমাণ অনেক কম। ফলে সেখানে শুধু ভবন তৈরি করতেই জমি সংকুচিত হয়ে পড়ছে।

স্থানীয় অভিভাবকদের মতে খেলার মাঠ ছাড়া কোনো বিদ্যালয়কে পূর্ণাঙ্গ বিদ্যালয় বলা যায় না। সরকারের খেলার মাঠের বিষয়ে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া উচিত। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি খেলাধুলাও গুরুত্বপূর্ণ। খেলাধুলার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব তৈরি হয়। বর্তমানে যেসব বিদ্যালয়ে খেলার মাঠ নেই, সরকারের উচিত সেখানে নতুন মাঠের ব্যবস্থা করা। অধিকাংশ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করলেও খেলাধুলায় পিছিয়ে রয়েছে। রংপুর প্রাথমিকের বিভাগীয় উপপরিচালক মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, অনেক বিদ্যালয়ে খেলার মাঠ না থাকলেও আমরা প্রতিটি বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছি। যেসব স্কুলে মাঠ নেই তারা পার্শ্ববর্তী মাঠে প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রতিয়োগিতায় অংশ গ্রহণ করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর