শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

রংপুর আওয়ামী লীগে হচ্ছে কী

গ্রুপিং-দলাদলিতে ব্যস্ত নেতা-কর্মীরা, জেলা-উপজেলা নেতাদের কেন্দ্রে তলব

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

রংপুর আওয়ামী লীগে হচ্ছে কী

রংপুরে আওয়ামী লীগে হচ্ছেটা কী। এমন প্রশ্ন উঠেছে সচেতন মহলের পক্ষ থেকে। গ্রুপিংয়ে ব্যস্ত নেতা-কর্মীরা। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে সহ্য করতে পারছে না। দ্বন্দ্ব নিরসনে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ জেলা ও উপজেলার নেতাদের ঢাকায় ডেকেছে আগামী ৩ মে।

জানা গেছে, গ্রুপিংয়ের কারণে ২৪ এপ্রিল কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য সোনা মিয়াকে পিটিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষ। উপজেলার ইমামগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এমপি ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ে এলে স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয় পক্ষের নেতা-কর্মীরা। এখানে দুটি গ্রুপ প্রকাশ্যে থাকলেও এখন পর্যন্ত কেন্দ্র থেকে কোনো হস্তক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি বলে দাবি স্থানীয় নেতা-কর্মীদের। তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম মায়া গ্রুপিংয়ের কথা অস্বীকার করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ একটি বৃহৎ দল। এখানে কোনো গ্রপিং নেই।

মিঠাপুকুরের এমপি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমান। এখানে উপজেলা চেয়ারম্যান সরকারদলীয় জাকির হোসেন। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এই উপজেলায় এমপি এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য। গত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে এখানে জাতীয় দিবসসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচি পৃথকভাবে পালিত হয়ে আসছে। উপজেলা চেয়ারম্যান আগে অথবা এমপির লোকজন আগে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করছেন। দুই পক্ষ একত্রে কোনো দিবস পালন করছেন না। এখানে দুটি গ্রুপ প্রকাশ্যে পৃথক পৃথক ভাবে কর্মসূচি পালন করছে। এখানে আওয়ামী লীগের দুটি কমিটি রয়েছে। একটি স্থানীয় এমপির নেতৃত্বে চলে। অপরটি উপজেলা চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে চলে। তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা মনে করছেন আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে এই দূরত্ব কমাতে না পারলে নির্বাচনের সময় চরম খেসারত দিতে হতে পারে সরকাররি দলকে। তবে উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন দাবি করেন, উপজেলার ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড কমিটিকে জেলা কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। তাই তিনি কমিটির লোকজনকে নিয়ে পৃথক ভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করেন।

রংপুর-৩ সদর আসনের এমপি জাতীয় পার্টির সাদ এরশাদ। এখানে আওয়ামী লীগে গ্রুপিং প্রকাশ্যে না এলেও বিভাজন স্পষ্ট। বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জে তৃণমূল পর্যায়ে এখানে সমন্বয়হীনতা রয়েছে বলে মনে করছেন মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। এদিকে রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে দলীয় অনৈক্যের বিষয় নেতা-কর্মীদের মুখে মুখে এখনো ঘুরপাক খাচ্ছে। গত বছরের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় ঐক্য না থাকায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাতীয় পার্টির প্রার্থীর কাছে জামানত হারিয়েছেন। নির্বাচনের পরপরই কেন্দ্র থেকে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি ভেঙে দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। স্থানীয় নেতা-কর্মীদের অভিযোগ আহ্বায়ক কমিটিও দলকে সুসংগঠিত করতে ভূমিকা রাখতে পারছেন না।

তবে জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ছায়াদত হোসেন বকুল বলেছেন, যেখানে দ্বন্দ্ব রয়েছে তা নিরসন করা হবে। আগামী ৩ মে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগে রংপুর জেলা ও ৮ উপজেলার নেতাদেরকে ঢাকায় ডেকেছেন। সেখানে সাংগঠনিক বিষয়ে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত হবে।

সর্বশেষ খবর