অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজের দুই-তৃতীয়াংশ কাজ বাকি রেখেই ফেনীর বিলোনিয়া স্থলবন্দর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল বিকালে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিলোনিয়া স্থলবন্দর উদ্বোধন করেন। বিলোনিয়া স্থলবন্দরের অবকাঠামোর এখনো ৭০ শতাংশ কাজ বাকি রয়েছে বলে জানিয়েছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ।
২০১৮ সালে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি মালামাল সংরক্ষণ ও পার্কিং সুবিধা, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিস ও আবাসন সুবিধাসহ বিলোনিয়া স্থলবন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এ জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় সাড়ে ৩৮ কোটি টাকা। অধিগ্রহণ করা হয় ১০ একর জমি।
২০১৯ সালে বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণে কাজ শুরু হয়। নকশার মাত্র ৩০ শতাংশ অংশ সীমানা থেকে দেড়শ গজের বাইরে থাকায় কাজ করা সম্ভব হয়। কিন্তু বাকি ৭০ শতাংশের কাজ দেড়শ গজের ভিতরে থাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বাধায় বন্ধ হয়ে যায়। এই নিয়ে স্থানীয় বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) ও বিএসএফ একাধিকবার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেও কোনো সুরাহা হয়নি। বিলোনিয়া স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণের এখনো ৭০ শতাংশ কাজ বাকি রয়েছে। বাংলাদেশ-ভারতের সীমানা বিরোধ সংক্রান্ত জটিলতার কারণে বিএসএফের বাধার কারণে বাকি কাজ করা সম্ভব হয়নি।পরশুরাম উপজেলার বিলোনিয়া সীমান্ত এলাকায় ২০০৯ সালে দেশের ১৭তম এ স্থলবন্দরটি স্থাপন করা হয়। তৎকালীন নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিলোনিয়া স্থলবন্দর উদ্বোধন করেন।
ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিপুরাসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার আমদানি-রপ্তানি বাড়ানোর লক্ষ্যে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ সিদ্ধান্তে স্থলবন্দরটি চালু করা হয়।
বিলোনিয়া স্থলবন্দরটি উদ্বোধনের পর থেকে একমুখী বাণিজ্য কার্যক্রম চালু রয়েছে। শুধু ভারতে রপ্তানি কার্যক্রম চলছে। ইতোপূর্বে স্থানীয় আমদানি-রপ্তানিকারকদের দাবির পরিপেক্ষিতে এবং মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত বছরের শেষদিকে আমদানি কার্যক্রম শুরু হলেও কয়েক সপ্তাহ পিঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এরপর ডলার সংকটসহ নানা অজুহাত দেখিয়ে আমদানি কার্যক্রম বন্ধ থাকে।
বিলোনিয়া স্থলবন্দরের কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম জানান, দুই-তৃতীংশ কাজ বাকি রয়েছে। তবে, বর্তমানে যে অবকাঠামো রয়েছে তা দিয়েও বন্দর কার্যক্রম চালু রাখা সম্ভব হবে।
নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, সরকার দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য দেশের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকায় বন্দর চালু করেছে। তার মধ্যে ফেনীর বিলোনিয়া স্থলবন্দরও রয়েছে। এই বন্দর অবকাঠামোগতভাবে আরও উন্নয়ন করা হবে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে ২০০১ সালের ১৪ জুন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। স্থলপথে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সম্ভাবনাকে বাস্তব রূপ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় ২৪টি স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এসব স্থলবন্দরের মধ্যে ইতোমধ্যেই ১৪টি স্থলবন্দরের উন্নয়ন সম্পন্ন করে অপারেশনাল কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। ফেনী জেলার পরশুরাম উপজেলায় ‘বিলোনিয়া স্থলবন্দর’ একটি।