শুক্রবার, ২ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা
হালদায় ডিম

২০১৬ সালের বিপর্যয়ের পুনরাবৃত্তির শঙ্কা!

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

২০১৬ সালের বিপর্যয়ের পুনরাবৃত্তির শঙ্কা!

উপমহাদেশের অন্যতম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র ও বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হালদা নদীতে ২০১৬ সালে মা মাছ মাত্র ৭৩৫ কেজি নমুনা ডিম ছাড়ে। এরপর ওই বছর আর মূল ডিম ছাড়েনি। এ বছরও ডিম ছাড়ার মৌসুমের প্রায় শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন পর্যন্ত একবারই সামান্য নমুনা ডিম ছেড়েছে। ফলে শঙ্কা দেখা দিয়েছে ডিম ছাড়া নিয়ে। ২০১৬ সালের সেই বিপর্যয়ের পুনরাবৃত্তি ঘটবে কি না। জানা যায়, ২০০৭ সাল থেকে হালদা নদীর মাছের ডিম সংগ্রহের তথ্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হালদা রিভার রিচার্স ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, দখল-দূষণ ও ভরাটের কবলে পড়ে ২০১৬ সালে হালদা নদীতে মা মাছের ডিম দেওয়া নিয়ে বিপর্যয় দেখা গিয়েছিল। এ বছরও মৌসুমের প্রায় শেষ পর্যায়ে চলে আসছে। কিন্তু এখনো একবার সামান্য নমুনা ডিম ছাড়া পুরোদমে আর ডিম দেয়নি। আবহাওয়ার অবস্থাও ভালো। তাই এখন শঙ্কায় আছি ২০১৬ সালের বিপর্যয়ের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে কি না।

তবে চলতি মৌসুমের পঞ্চম জো ১ থেকে ৭ জুন এবং ষষ্ঠ জো ১৪ থেকে ২০ জুন। আমরা এ দুটি জোর অপেক্ষায় আছি। আশা করি, তখন প্রাকৃতিক পরিবেশ ইতিবাচক হবে।

জানা যায়, প্রতিবছর মে-জুন মাসের মধ্যে ডিম ছাড়ে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালবাউশ মা মাছ। বজ্রসহ বৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল ও আকাশের গর্জন হলে মা মাছ ডিম ছাড়ে। এর সঙ্গে লাগে পূর্ণিমার জো। ডিম সংগ্রহে আছে প্রায় ৫০০ নৌকা এবং প্রায় ৮০০ ডিম সংগ্রহকারী। নদীর মা মাছ রক্ষা ও অবৈধ কার্যক্রম বন্ধে নৌ-পুলিশ ১০ কিলোমিটার এলাকায় স্থাপন করেছে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা। একই সঙ্গে রেণু পোনা ফোটানো হ্যাচারিতেও সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়ে ডিম সংগ্রহ ও রেণু উৎপাদন কার্যক্রম তদারকি করা হবে। সংগ্রহ করা ডিম প্রক্রিয়াকরণে প্রস্তুত রাখা হয়েছে দুটি উপজেলার চারটি সরকারি হ্যাচারি ও বেসরকারি পর্যায়ে আছে ১৭৬টি মাটির কুয়া। হালদা নদীর কাগতিয়ার আজিমের ঘাট, খলিফার ঘোনা, পশ্চিম গহিরা, অংকুরি ঘোনা, বিনাজুরী, সোনাইর মুখ, আবুরখীল, সত্তারঘাট, দক্ষিণ গহিরা, মোবারকখীল, মগদাই, মদুনাঘাট, উরকিচর এবং হাটহাজারী গড়দুয়ারা, নাপিতের ঘাট, সিপাহির ঘাট, আমতুয়া, মার্দাশা ইত্যাদি এলাকায় ডিম বেশি পাওয়া যায়।

সর্বশেষ খবর