চট্টগ্রামের খাদ্য অধিদপ্তরের সরকারি খাদ্যগুদামের পণ্য পরিবহনের আধিপত্য ধরে রাখতে এখনো মরিয়া গণহত্যা মামলার আসামি আওয়ামী লীগের পলাতক এক নেতা। নির্বাচন ছাড়া গত ১৪ বছর সভাপতির পদ আঁকড়ে রেখেছিলেন যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ‘খাদ্য অধিদপ্তরের মাফিয়া খ্যাত’ সৈয়দ মাহমুদুল হক। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও তিনি পুরনো পন্থায় খাদ্যের একক আধিপত্য ধরে রাখতে নির্বাচনের নামে নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া। গণহত্যা মামলার পলাতক আসামি হলেও তাঁর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ প্যানেল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি নির্বাচন কমিশনারের সহযোগিতায় ভোট কারচুপি করে ফের সভাপতি হতে এখন নানা অপতৎপরতা চালাচ্ছেন। বাংলাদেশ খাদ্য পরিবহন ঠিকাদার সমিতির সভাপতি প্রার্থী এস এম আবুল মনছুর বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনাররা সুপরিকল্পিতভাবে আওয়ামী দোসর দুটি গণহত্যা মামলার পলাতক আসামি সৈয়দ মাহমুদুল হককে বিজয়ী করতে ফলাফল ঘোষণা করেননি। নির্বাচন শেষ হওয়ার পর বারবার ফলাফল ঘোষণার দাবি জানালেও তারা সময় নিয়েছেন। এজন্য ফলাফল ঘোষণা করেননি। যার কারণে আমরা পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়ে আসছি পুনরায় ভোট গ্রহণের জন্য।’
জানা যায়, বাংলাদেশ খাদ্য পরিবহন ঠিকাদার সমিতির নির্বাচন ৩০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। সমিতির ১৮ পদে আওয়ামী লীগের একটি এবং বিএনপি-জামায়াতের একটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। ভোট গ্রহণের সাত দিন পেরিয়ে গেলেও ফলাফল ঘোষণা করতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। অভিযোগ উঠেছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার আওয়ামী লীগ ঘরানার ঠিকাদার আওয়ামী লীগ প্যানেলকে জেতাতে নানা ধরনের অনিয়ম ও জালিয়াতি করেছেন। কারণ প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইউসুফ মাহবুবের ছেলে শেফায়েত মাহবুব আওয়ামী লীগ প্যানেলের সদস্য প্রার্থী। অপর নির্বাচন কমিশনার সৈয়দ আবদুর রহিম সভাপতি প্রার্থী পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ মাহমুদুল হকের ছোট ভাই। যার কারণে শুরু থেকেই এ নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব ও জালিয়াতির অভিযোগ করে আসছেন অন্য প্যানেলের প্রার্থীরা। স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর একাধিক খুনের মামলায় আসামি হয়ে আত্মগোপনে থাকা সভাপতি প্রার্থী চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক সৈয়দ মাহমুদুল হক। তিনি ভারতে পালিয়ে গেলেও তাঁর স্বাক্ষর জাল করে তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে বশে রেখে জালিয়াতির মাধ্যমে প্রার্থী করে তাঁকে পুনরায় সভাপতি করে খাদ্যগুদামে আধিপত্য ধরে রাখতে মরিয়া আওয়ামীপন্থি ঠিকাদাররা। তাঁদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় বিএনপির কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধেও।
এদিকে বিএনপি-জামায়াত প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী আবুল মনসুরের বিরুদ্ধে ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আওয়ামীপন্থি প্রার্থীরা। অপরদিকে তিন সভাপতি প্রার্থীর উপস্থিতিতে ভোট গণনার দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন বিএনপি-জামায়াত প্যানেলের প্রার্থীরা।