আধুনিক চিকিৎসার জন্য অপরিহার্য ডায়াগনস্টিক যন্ত্র, চিকিৎসা ইমেজিং মেশিন, অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম, স্যালাইন সেট-এগুলোর ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশই আমদানি করতে হয়। দেশে চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় সাড়ে ৪ হাজারের বেশি ধরনের সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি। এর মধ্যে মাত্র ৪০ থেকে ৫০টি দেশে উৎপাদিত হয়। আমদানিনির্ভর এই খাতটি সঠিক পরিকল্পনার অভাবে দাঁড়াতে পারছে না।
গতকাল ‘বাংলাদেশে চিকিৎসা সরঞ্জাম খাতের বর্তমান অবস্থা, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন উদ্যোক্তারা। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর মেডিকেল ডিভাইসেস অ্যান্ড সার্জিক্যাল ইনস্ট্রুমেন্টস ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স (বিএএমডিএসআইএমই)-এর কার্যালয়ে আয়োজিত সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএএমডিএসআইএমই-এর সভাপতি মো. আবদুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, ১৯৮২ সালের ওষুধ নীতির ফলে দেশে ওষুধ শিল্পের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে। আমদানিনির্ভরতা কমে রপ্তানি বেড়েছে। তেমনই চিকিৎসা সরঞ্জাম শিল্পেও একটি স্বতন্ত্র নীতিমালা প্রণয়ন করা জরুরি। তিনি আরও বলেন, এ খাতে আমদানিনির্ভরতা কমাতে সরকারি ক্রয়ে দেশীয় পণ্যের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং দেশে উৎপাদনযোগ্য পণ্যের আমদানি বন্ধ করতে হবে। এ ছাড়া চিকিৎসা সরঞ্জাম শিল্পে কর অবকাশ (ট্যাক্স হলিডে) সুবিধা প্রদান, রপ্তানি প্রণোদনা ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে অন্তত ২০ শতাংশ করা এবং ন্যূনতম ১০ বছর বহাল রাখা প্রয়োজন।
অ্যাকিউরা বায়োটেকনোলজি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মোহাম্মদ সেলিম বলেন, এখনো দেশে উৎপাদিত মেডিকেল সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতির চেয়ে বিদেশ থেকে আমদানি করলে খরচ কম হয়। আলাদা নীতিমালা না হলে এই শিল্প দাঁড়াবে না। সরকারি হাসপাতালগুলোতে বছরে কোটি কোটি টাকার মেডিকেল সরঞ্জাম কেনা হয়। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দেশীয় উৎপাদিত সরঞ্জাম ক্রয় করে না। মূল্য অনেক কম দিলেও নিতে চায় না। সরকারি হাসপাতালে দেশীয় সরঞ্জাম কেনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। গেটওয়েল লিমিটেডের কার্যক্রম ও উন্নয়ন শাখার জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান বলেন, ৮ থেকে ১০ শতাংশ মেডিকেল সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি দেশে উৎপাদন হচ্ছে। এটি বাড়িয়ে ৮০ শতাংশ করার সক্ষমতা আমাদের রয়েছে। তবে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানদের সঙ্গে আমরা পারছি না।