চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র এহসান আল জামি ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে। কিন্তু স্থানীয় গ্রামবাসীর আক্রমণের শিকার হয়ে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হন। তিনি এখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিউরো সার্জারি ওয়ার্ডের বেডে। এ শিক্ষার্থী যখন খাতা-কলম ও বই নিয়ে ক্লাস-পরীক্ষায় থাকার কথা, ঠিক সেই সময় তাকে হাতে ক্যানুলা-ব্যান্ডেজ-স্যালাইন নিয়ে হাসপাতালের বেডে কাতরাতে হচ্ছে। এভাবে কেবল জামি নয়, চবির ঘটনায় নগরের তিনটি হাসপাতালে মোট ১৪৫ জনকে ভর্তি করা হয়েছিল। এর মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আইসিইউতে থাকা দুজনের মধ্যে একজনকে গতকাল সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। চবিতে বর্তমানে ৪৮টি বিভাগ ও ৬টি ইনস্টিটিউটে প্রায় ২৭ হাজার ৫৫০ শিক্ষার্থী আছে।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার চবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় গ্রামবাসীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় মারাত্মকভাবে ভাস্কুলার ইনজুরি হওয়ায় চবি ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী নাইমুল ইসলামকে বেসরকারি ন্যাশনাল হাসপাতালের আইসিইউ থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। তা ছাড়া ক্রেনিওটমি রোগে আক্রান্ত হওয়ায় পার্কভিউ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি আছেন দুই শিক্ষার্থী। তারা হলেন ইমতিয়াজ সায়েম (২৪) ও আবদুল্লাহ আল মামুন (২৩)। আর বর্তমানে চমেক হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন ১১ জন। অন্যদিকে গত রবিবার চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আহত অসংখ্য শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। এর মধ্যে কারও মাথায় জখম, কারও শরীর রক্তাক্ত, কেউ হাতে কিংবা শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এখন পর্যন্ত ১৪৪ জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে তিনজনের অবস্থা খুবই গুরুতর। এর মধ্যে দুজনের মাথায় আঘাত, অন্যজনের ভাস্কুলার ইনজুরি রয়েছে। মাথায় ইনজুরি থাকা বাকি দুজনকে মাথায় অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে। চবি মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন বলেন, আমি আহতদের দেখতে চমেক হাসপাতাল ও পার্কভিউতে গেছি। পার্কভিউতে দুজনের অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তবে ছোট একটা ঘটনা থেকে এত বড় হয়ে যাওয়াটা কোনোমতেই কাম্য নয়। প্রসঙ্গত, গত শনিবার রাতে এক তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় গ্রামবাসীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় চবির অসংখ্য শিক্ষার্থী আহত হন। আহতদের চবির ৮টা বাস ও ৯টা অ্যাম্বুলেন্সে করে চমেক হাসপাতালসহ নগরের বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়।