হেপাটাইটিসমুক্ত কর্মক্ষেত্র-সুরক্ষা তাদের, যারা আমাদের সেবা দেন- এই স্লোগানকে ধারণ করে সাভারে স্বাস্থ্যসেবায় কর্মরত নিম্ন আয়ের স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হেপাটাইটিস বি ও সি প্রতিরোধে হেফাসেফ ২.০ প্রকল্পের মাধ্যমে স্ক্রিনিং ও ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গতকাল বিকালে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মিলনায়তনে জেসিআই ঢাকা অ্যাস্ট্রাল-এর উদ্যোগে এবং এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগিতায় ২.০ প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু করা হয়।
এ প্রকল্পের অধীনে গতকাল প্রথম পর্যায়ে ৫০ জন নিম্ন আয়ের স্বাস্থ্যকর্মীর হেপাটাইটিস বি ও সি স্ক্রিনিং এবং টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে ২০০ স্বাস্থ্যকর্মীর স্ক্রিনিং ও টিকা প্রদান সম্পন্ন করা হবে।
প্রজেক্ট চেয়ারপারসন ও এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান শামস মো. এনাম বলেন, যারা প্রতিদিন রোগীর পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করেন, তারাই সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকেন। হেফাসেফ ২.০ এর মাধ্যমে আমরা শুধু টেস্ট বা টিকা দিচ্ছি না, আমরা একটি সংস্কৃতি তৈরি করছি যেখানে প্রতিটি স্বাস্থ্যকর্মী জানবে নিজের সুরক্ষা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এই উদ্যোগের লক্ষ্য কেবল রোগ প্রতিরোধ নয়, বরং একটি নিরাপদ, মানবিক ও সচেতন স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে ংতোলা। প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হেপাটাইটিস বি ও সি সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস, বিনামূল্যে স্ক্রিনিং ও টিকাদান সুবিধা, প্রশিক্ষণ ও সুরক্ষা সংস্কৃতি স্থাপন ও নিম্ন আয়ের হাসপাতাল কর্মীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা ও মর্যাদা বৃদ্ধি। এর মধ্যে প্রথম পর্বে অংশগ্রহণ করবেন হাসপাতালের ওয়ার্ড বয়, আয়া, ট্রলি ম্যান, ক্লিনার ও প্যাথলজি সহকারীসহ বিভিন্ন নিম্ন আয়ের স্বাস্থ্যকর্মী। কার্যক্রম চলবে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। যেখানে পরীক্ষার পাশাপাশি হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দেওয়া হবে এবং পরবর্তী সময়ে ফলোআপ ও রিপোর্ট পর্যবেক্ষণ করা হবে।
এর আগে সকালে ‘ইউনাইটেড বাই ইউনিক-ট্রান্স হেলথ ইকুইটি’ প্রকল্পের মাধ্যমে ট্রান্সজেন্ডার কমিউনিটির জন্য বিনামূল্যে ক্যানসার স্ক্রিনিং, মানসিক স্বাস্থ্য মূল্যায়ন ও এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। ৫০ জন ট্রান্সজেন্ডার অংশগ্রহণকারীকে বিনামূল্যে ক্লিনিক্যাল ব্রেস্ট ক্যানসার স্ক্রিনিং, মানসিক স্বাস্থ্য মূল্যায়ন ও এইচপিভি টিকার প্রথম ডোজ প্রদান করা হয়েছে।
প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে এই অংশগ্রহণকারীদের দ্বিতীয় ডোজ টিকা ভিআইএ/পিএপি সময়ের এবং ম্যামোগ্রাম স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে।
প্রকল্পের চেয়ারপারসন ও ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডা. সিনথিয়া আফরীন বলেন, ট্রান্সজেন্ডার মানুষেরা চিকিৎসা পাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত। চিকিৎসা কেবল রোগ নিরাময়ের বিজ্ঞান নয়, এটি নৈতিক দায়িত্ব- প্রতিটি জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের এক পথ।
জেসিআই ঢাকা অ্যাস্ট্রাল-এর লোকাল প্রেসিডেন্ট এবং এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান শামস মো. এনাম বলেন, প্রতিটি মানুষ তার পরিচয় নির্বিশেষে মর্যাদাপূর্ণ চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার রাখে।