বরিশালের বিভিন্ন নদী, খাল ও বিলে অসাধু চক্র বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকার করছে। গত এক মাসে সদর উপজেলার চরকাউয়া, বাবুগঞ্জের রহমতপুর এবং উজিরপুরের গুঠিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় একাধিকবার বিষ দিয়ে মাছ ধরার ঘটনা ঘটেছে। এতে নদী জলাশয়ের জীববৈচিত্র্য চরম হুমকির মুখে পড়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাতের আঁধারে নদীর নির্দিষ্ট জায়গায় কীটনাশক ঢেলে দেওয়া হয়। এক থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে মাছ অসুস্থ হয়ে ভেসে ওঠে বা মারা যায়। পরে জাল ফেলে সংগ্রহ করা হয় এসব মাছ। বিষ নদীর পানিতে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এতে শুধু মাছ ছাড়াও ব্যাঙ, শামুক, কাঁকড়া ও অন্যান্য জলজ প্রাণী মারা যাচ্ছে। এসব বিষাক্ত মাছ খেলে কিডনি ও লিভারের ক্ষতিসহ নানা রোগের ঝুঁকি বাড়ে। বিষাক্ত পানির কারণে ফসল ও পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
বরিশালের মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলম জানান, জোয়ার ভাটার মধ্যবর্তী ৩৪ মিনিট সময় কিছু অসাধু জেলে ‘ফাইটার’ নামে একটি ওষুধ দেয়। এতে নদীর এক একরের মধ্যে যত ধরনের মাছ থাকে তা তীরে চলে আসে। ছোট ছোট নদীতে এমনভাবে মাছ শিকারের কথা শুনেছি। এদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
তিনি জানান, বিষ দিয়ে শিকার করা মাছে প্রকৃত স্বাদ থাকে না। এসব মাছ দ্রুত সময়ের মধ্যে পঁচে যায়।
ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক মুহাম্মাদ নাসিরউদ্দিন বলেন, উন্মুক্ত এবং প্রবাহিত জলাশয়ে ওষুধ ব্যবহার করে মাছ শিকার নিষিদ্ধ। কারণ নদীর কোনো স্থানে এ জাতীয় বিষ দিলে ওই স্থানে অন্তত ১৫ দিন কোনো মাছ আসে না। এতে জেলেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ ছাড়া বিষ দেওয়া মাছ খেলে মানুষের শরীরের ক্ষতি হয়। তাই জনসচেতনতা জরুরি। জনসচেতনতা ছাড়া এদের প্রতিরোধ করা যাবে না।