রেকর্ডসংখ্যক আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে থাকবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। এ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে ‘গণতান্ত্রিক যাত্রার পুনঃসূচনা হবে’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘সাধারণত অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনগুলোতে বিদেশ থেকে বহু পর্যবেক্ষক আসেন। এবারের নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক থাকবেন। ইতিবাচকভাবে বলতে গেলে বলতে হয়, সবাই বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক যাত্রার পুনঃসূচনার ইতিহাসের অংশীদার হতে পারবেন।’ গতকাল রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস’ কর্মশালায় এসব কথা বলেন এই নির্বাচন কমিশনার।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা তফসিল ঘোষণার পর আসতে শুরু করবেন জানিয়ে আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘যে কোনো বিদেশি নাগরিক দূতাবাসের মাধ্যমে পর্যবেক্ষক হওয়ার আবেদন করতে পারবেন। আমরা যাচাইবাছাই করে আবেদনগুলো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাব।’
স্থানীয় পর্যায়ের পর্যবেক্ষক মনোনয়নের ক্ষেত্রে ‘সীমাবদ্ধতা’ তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘সীমাবদ্ধতাটি হলো, গত তিনটি জাতীয় নির্বাচন; যারা ওই তিন নির্বাচনে পর্যবেক্ষণে জড়িত ছিলেন তাঁরা সেগুলোকে গ্রহণযোগ্যতা দিয়েছেন; তাই দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা তাঁদের নিতে পারিনি। তবে সৌভাগ্যজনকভাবে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আগ্রহ প্রকাশ করে প্রাথমিকভাবে ৩০০টির বেশি আবেদন আমরা পেয়েছিলাম, আমরা তাঁদের সক্ষমতা যাচাই করেছি। প্রায় ৮০টি প্রতিষ্ঠান আসন্ন নির্বাচনে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালন করবে। এ সংখ্যাটিও ভালো, আগের নির্বাচনগুলোতে পর্যবেক্ষকের সংখ্যা খুব কম ছিল।’
দেশে অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনগুলোতে সাধারণত ১ থেকে ২ লাখ পর্যবেক্ষক থাকেন জানিয়ে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, ‘এটা ভালো সংখ্যা, কারণ আমাদের ৪২ হাজার ৭০০টির মতো কেন্দ্র আছে। প্রতি কেন্দ্রে অন্তত একজন পর্যবেক্ষক রাখাই সক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের ভিতরেই যথেষ্টসংখ্যক নাগরিক পর্যবেক্ষক রয়েছেন, আমরা ২৫ নভেম্বর তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করব। ভবিষ্যতে নির্বাচন প্রক্রিয়ার উন্নয়নের জন্য আমরা তাঁদের কাজে লাগাতে চাই।’
অংশীদার সংস্থাগুলোর অনুরোধে স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের বয়সসীমা ২৪ থেকে কমিয়ে ২১ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাঁদের অভিজ্ঞতার ঘাটতি থাকতে পারে বলে আমাদের মনে হয়েছে। এ বিষয়টি বিবেচনায় রেখে আমরা প্রয়োজন অনুযায়ী তাঁদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব।’
ইসি ভোটকে অংশগ্রহণমূলক করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে মন্তব্য করে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, ‘এআইয়ের অপব্যবহার, সমাজমাধ্যমে মিসইনফরমেশন আর ডিসইনফরমেশন মোকাবিলা বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে ইসি। তবে সবার সহযোগিতায় ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন সম্ভব।’ বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপিন্সসহ বিভিন্ন দেশের নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের অভিজ্ঞতা বিনিময়ে কর্মশালাটির আয়োজন করে এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস।