বাড়ি গিয়েছিলাম। ১৭ দিন ছিলাম। গতকাল গভীর রাতে ফিরেছি। ভালো আছি।
টরেন্টো এয়ারপোর্টের নিরাপত্তাকর্মীরা হোম - কোয়ারেন্টিনের কাগজ ধরিয়ে দিয়েছে। আপাতত কয়েকদিন অনেকটা 'হাউস এরেস্ট' এর মতোই থাকতে হবে।দোহা - লন্ডন আর টরেন্টো এয়ারপোর্টের সাংঘাতিক রকমের কড়াকড়ি আর চেক আপের ব্যবস্থা ছিল অনেকটা যুদ্ধ অবস্থার মতো। বিন্দুমাত্র শিথিলতা চোখে পড়ে নাই।
লন্ডনের হিথরো এয়ারপোর্টের অত্যাধুনিক মেশিনে কয়েক দফা স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরেও ফ্লাইটের ভেতরে সামনের সারিতে বসা এক যাত্রী বারকয়েক কাশি দিলে তাকে নামিয়ে করোনা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে এক ঘণ্টা দেরিতে ফ্লাইট ছেড়েছে। এক্ষেত্রে সতর্কতার বিষয়টা কি বুঝতে পেরেছেন?
অথচ গত সোমবার ভোরে টরেন্টো ফিরে আসার সময় ঢাকা বিমানবন্দরের পরিস্থিতি ছিল ঠিক তার উল্টো। মানুষের ভেতরে আতঙ্ক থাকলেও করোনা পরীক্ষার কোন মেশিন আমাকে পরীক্ষা করেছিল কিনা তা আমার আজানাই রয়ে গেছে।
শুরু থেকেই প্রচণ্ড অব্যবস্থাপনা অকারণে লুকোচুরি বা গোপন করার চেষ্টা নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে মন্ত্রী মিনিস্টারদের আলতু-ফালতু কথা ঘনবসতিপূর্ণ প্রিয় মাতৃভূমিকে এক বিরাট ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার হচ্ছে করোনা পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় মেশিনের অভাব। কে, কোথায়, কখন ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে অন্যদের সংক্রমিত করছে তা জানার কোন উপায় নেই। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি হয়তো নিজের অজান্তেই আশেপাশে ছড়িয়ে দিচ্ছে এই ভয়ানক ভাইরাস।
তাই এখনই এই মুহূর্তে যে করেই হোক দেশের প্রতিটি হাসপাতালে এমনকি সম্ভব হলে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে করোনা পরীক্ষার মেশিনের ব্যবস্থা করা হোক। তাৎক্ষণিক মেশিনের জন্য হিংসার রাজনীতি বাদ দিয়ে গণস্বাস্থ্যে কেন্দ্রের উদ্ভাবিত করোনা পরীক্ষার মেশিন বা টেস্টিং কিট সরকারি অর্থায়নে আরও বেশি করে তৈরি করে সর্বত্র বিতরণ করতে হবে।
দেশের কারাগারগুলোতে যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সে ব্যাপারেও বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন। জনসমাগমের জায়গাগুলো বন্ধ করতে হবে। সকল ধরনের পিকনিক পতেঙ্গা ভ্রমণ জনসমাবেশ বিয়ে-সাদি কড়াকড়ি ভাবে বন্ধ করতে হবে।
আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মতামত এবং প্রতিকার বিষয়ক মন্তব্যগুলো বারবার মিডিয়াতে প্রচার করতে হবে।
'শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে করোনা কিছুই করতে পারবে না' মন্ত্রীদের এই ধরনের কথাবার্তা অবশ্যই বন্ধ করে পুরো ব্যাপারটাকেই খুবই সিরিয়াসলি নিতে হবে। এখন এই সবের সময় না। মনে রাখবেন বিশ্বব্যাপী প্রলয় শুরু হয়ে গেছে। আধুনিক মানব সভ্যতার ইতিহাসে এতো বড় বিপর্যয় আর আসে নাই। তাই হুঁশিয়ার।
আপনারা ভালো থাকবেন। আমাদের ভালো থাকার জন্যও আশীর্বাদ করবেন।
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত