মহামারী করোনাভাইরাসে বিশ্বজুড়ে এরই মধ্যে প্রাণ গেছে ১৬ হাজার ৫১০ জনের। এর মধ্যে শুধু গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১৮৬৯ জনের। এমন পরিস্থিতিতে বারবারই আলোচনায় আসছে এর চিকিৎসা নিয়ে। চলছে গবেষণাও। এরই মধ্যে আলোচনায় এসেছে হাইড্রোক্সাইক্লোরোকুইন নামের ওষুধের নাম।
সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসন অন্যান্য ওষুধের মধ্যে ক্লোরোকুইন এবং হাইড্রোক্সাইক্লোরোকুইনকে খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) দ্বারা অনুমোদিত কোভিড -১৯ করোনাভাইরাস ট্রিটমেন্ট হিসেবে পরীক্ষা করার জন্য অনুমোদনের ঘোষণা দিয়েছে। এর আগে ফ্রান্সেও হাইড্রোক্সাইক্লোরোকুইনের প্রাথমিক পরীক্ষার আশাব্যঞ্জক ফলাফল দেখা গেছে। যদিও এটি ভাইরাসের জন্য কার্যকর সমাধান কিনা তার ফলাফলগুলো এখনও অত্যন্ত অস্পষ্ট। তবে এই ড্রাগটি আসলে কী সেটা জানা জরুরি।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ১৯৫০ সালে প্রধানত ম্যালেরিয়া রোগের চিকিৎসায় অনুমোদিত হয়েছিল হাইড্রোক্সাইক্লোরকুইন (প্ল্যাকুইনিল ব্র্যান্ড নামে বিক্রি করা হয়)। তখন থেকে ওষুধগুলো সিস্টেমেটিক লুপাস এরিথেমেটাস (সাধারণত লুপাস হিসাবে পরিচিত), রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস এমনকি লাইম রোগের জটিলতাসহ বিভিন্ন রোগের জন্য ব্যবহৃত হয়।
এই ওষুধ হাইড্রোঅক্সিক্লোরোকুইন গোত্রের যা আর্থ্রাইটিসসহ কিছু রোগের চিকিৎসায় এর ব্যবহার দেখা যায়। এই ওষুধ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসকেও নির্মূলে কার্যকর হতে পারে।
সম্প্রতি চিকিৎসা বিষয়ক এক জার্নালের প্রতিবেদনে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। চীনের উহানের সায়েন্স একাডেমি এক চিঠিতে উল্লেখ করে, আমরা অনুমান করছি এই ওষুধের করোনা প্রতিরোধে কার্যকর সক্ষমতা রয়েছে।
এছাড়া ফ্রান্সের এক দল স্বাস্থ্য গবেষক বিস্তৃতভাবে এর পরীক্ষা করেছেন। তারা ৩৬ রোগীর ওপর এর পরীক্ষা করেছেন। এ গবেষণায় নেতৃত্ব দেন মার্সেলির বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ দিদিয়ের রাউলট। গবেষণায় প্রত্যেক রোগীকে প্রতিদিন ৬০০ মি.গ্রা. প্ল্যাকুইনিল খেতে দেয়া হয়।
গবেষকরা জানান, তৃতীয় দিনেই করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের ৫০ ভাগ সুস্থ হয়ে ওঠেন। ষষ্ঠ দিনে সুস্থ হন ৭০ ভাগ। এদের মধ্যে ২০ জনকে প্ল্যাকুইনিলের সঙ্গে অ্যান্টিবায়োটিক অ্যাজিথ্রোমাইসিন দেয়া হয়। ষষ্ঠ দিনে তাদের সবাই সুস্থ হয়ে ওঠেন।
কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে হাইড্রোক্সিলোরোকুইনের। কারো যদি মাথাব্যথা, ক্ষুধা হ্রাস, বমি বমি ভাব, ত্বকের ফুসকুড়ি ইত্যাদি থাকে তবে তাদের ক্ষেত্রে এটা কিছুটা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তবে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা। তবে এই ওষুধগুলো ব্যবহারের একটি উল্লেখযোগ্য সুবিধা হলো; এগুলো বাজারে খুব সহজেই পাওয়া যায়।
বিডি-প্রতিদিন/ওয়াসিফ