করোনা আতঙ্কে মাদারীপুরে প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসক নেই

হঠাৎ করে মাদারীপুরে ক্লিনিকগুলোতে নিয়মিত চেম্বার করা বেশির ভাগ ডাক্তার উধাও হয়ে গেছে। ক্লিনিক মালিকরা ডাক্তার উধাও হওয়ার জন্য ডাক্তারদের নিরাপত্তার কথা বলছেন। অন্যদিকে সরকারি হাসপাতালে জ্বর, ঠান্ডা ও কাশির কোন চিকিৎসা দিচ্ছে না জরুরি বিভাগ। এতে রোগীরা যেমন বিপাকে পরছেন, তেমনি আতংকিত হয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষ। 

করোনাভাইরাসের প্রভাবে এরই মধ্যে শিবচর উপজেলা লকডাউন করলেও কার্যত পুরো জেলা জুড়েই মানুষ এখন ঘরবন্দি। ফলে চিকিৎসার মতো মৌলিক সেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় উদ্বেগ আর উৎকন্ঠা দিন কাটাচ্ছে মাদারীপুরবাসী।  

মাদারীপুর জেলা শহরের কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে জানা যায়, অসুস্থ্য শিশু, বৃদ্ধসহ রোগীরা অপেক্ষা করছে ডাক্তার দেখাতে। কিন্তু ডাক্তার চেম্বার না করার বিপাকে পরেছেন তারা। জেলার ছোট-বড় ১০৬টি ক্লিনিক ও ডায়গনস্ট্রিক সেন্টারে নিয়মিত যেসব ডাক্তার রোগী দেখতেন তারা আর চেম্বার করছেন না। এমনকি কোন কোন ডাক্তার জেলা ছেড়ে চলে গেছেন অন্য কোথাও। এ খবরটি ছড়িয়ে পরেছে জেলার সর্বস্তরে। এতে আতংকিত হয়ে পরেছে মানুষ। ডাক্তার দেখাতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। অসুস্থ্য রোগীদের কিভাবে চিকিৎসা করাবেন ভেবে পাচ্ছেন না তারা। 

জরুরি বিষয় ছাড়া ডাক্তারের কাছে না যাওয়ার পরামর্শ মাদারীপুর স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা সির্ভিল সার্জন মো. শফিকুল ইসলামের। তিনি জানান, ফোনে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়া যেতে পারে। খুব বেশি অসুস্থ্য হলে সরকারী হাসপাতালগুলোতে আসতে পারে, তবে চিকিৎসকদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে একজন ডাক্তারকে একদিন পর পর ডিউটি দেয়া হচ্ছে। আর প্রাইভেট ক্লিনিক মালিকদের সাথে আলোচনা করে ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসা সেবা স্বাভাবিক করার কথা বলবো। তারপরেও যদি কেউ না রাখে তাহলে কোন নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জাতীয় এই দুর্যোগে ডাক্তারদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম। তিনি সবাইকে করোনার মতো দুর্ভোগে সহযোগিতার আহবান জানিয়ে বলেন, ‘আমার কাছেও অভিযোগ আছে প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসকগণ সেবা দিচ্ছেন না। আমি মনে করি, সেবার যে ব্রত নিয়ে তারা এই পেশায় এসেছে তাদের সাধারণ মানুষের যে কোন বিপদে পাশে থাকা উচিত। ক্লিনিক মালিকদের সাথে আমি কথা বলেছি এবং অনুরোধও করেছি এই জরুরি পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে দাড়াতে। সরকারি ভাবে যেসব নিরাপত্তা ইকুমেন্ট আসবে সবই তাদের মাঝে বিতরণ করা হবে।’ 

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার