নোয়াখালীতে করোনা ও এর উপসর্গে শ্বাসকষ্টজনিত রোগীদের আশা জাগিয়েছে পুলিশ অক্সিজেন ব্যাংক। করোনাসহ যে কোনো রোগে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন এমন রোগীরা দিন কিংবা রাতে ফোন করলেই বিনামূল্যে পৌঁছাবে অক্সিজেনের সিলিন্ডার। জেলার গন্ডি পেরিয়ে এখন পাশবর্তী জেলা লক্ষীপুর, ফেনী, কুমিল্লার রোগীরাও পাচ্ছেন এ অক্সিজেন সেবা। এ পর্যন্ত দুই শতাধিক রোগীকে অক্সিজেন সেবা দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
চৌমুহনীর ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক এস এম কামরুল হাসান উদ্যোগ নেন বিনামূল্যে অক্সিজেন সরবরাহের। নোয়াখালী পুলিশ সুপারের সার্বিক সহযোগীতায় তিনি নেমে পড়েন মিশনে। মূলত সেখান থেকেই যাত্রা হয় নোয়াখালী পুলিশ অক্সিজেন ব্যাংকের।
প্রথমে ১০টি বড় অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে আছে ৪৫টি বড় অক্সিজেন সিলিন্ডার। কোন প্রকার অর্থ ছাড়াই পুলিশ অক্সিজেন ব্যাংক থেকে রোগীদের অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করা হচ্ছে। কল করলেই রোগীর বাড়িতে পৌঁছে যাচ্ছে অক্সিজেন সিলিন্ডার।
করোনায় আক্রান্ত নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও বেগমগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ভিপি মোহাম্মদ উল্যাহ জানান, আমি অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই পুলিশ অক্সিজেন ব্যাংক থেকে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়। পুলিশের এমন উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। কারণ অনেক গরীব মানুষ আছে যারা টাকার অভাবে অক্সিজেন নিতে না পেরে শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা যায়। এখন পুলিশের এখান থেকে সহজেই তারা সহযোগীতা পাচ্ছে।
চৌমুহনী ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক এস এম কামরুল হাসান জানান, ডিউটি করা কালে রাস্তায় এক নারীকে শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা যেতে দেখে খুবই খারাপ লেগেছিলো। তাই আমি আমাদের এসপি স্যারের কাছে বিষয়টি জানালে অক্সিজেন ব্যাংক করার জন্য স্যার আমাকে সাপোর্ট করেন। সেই থেকেই এই অক্সিজেন ব্যাংকের সৃষ্টি। এ পর্যন্ত আমরা দুই শতাধিক রোগীকে অক্সিজেন সেবা দিয়েছি।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন জানান, অক্সিজেনের অভাবে অনেক মানুষ মারা যায়। সে মৃত্যু হ্রাসকল্পেই আমরা এই অক্সিজেন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছি। শুধু নোয়াখালী নয়, কুমিল্লা, লক্ষীপুর ও ফেনীতে এখান থেকে অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে। আমাদের এই সেবা অব্যাহত থাকবেন।
উল্লেখ্য, নোয়াখালীতে এখন পর্যন্ত করোনায় কেড়ে নিয়েছে ১০৬ জনের প্রাণ ও আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৭ হাজার মানুষ।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল