কুকুর আতঙ্কে ভুগছেন মানিকগঞ্জবাসী। শহরের প্রধান প্রধান সড়কসহ অলিতে-গলিতে এমনকি বড় বড় বিপণিবিতানের সামনে দল বেঁধে বসে থাকে কুকুর। বিভিন্ন হাটবাজারে বিশেষ করে গরু-ছাগল জবাই হয় এমন এলাকায় কুকুরের বিচরণ বেশি। এসব জায়গায় দিনরাত দেখা যায় কুকুরের জটলা। সুযোগ পেলেই এসব কুকুর কামড় বসায় মানুষের হাত-পায়ে। গত তিন বছরে কুকুরের কামড়ে এ জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ। মানিকগঞ্জ সিভিল সার্জনের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, প্রায় প্রতিদিন শহরসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ৭০-৮০ জন সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে। এদের বেশিরভাগ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। বিষয়টি নিয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্য বিভাগ উদ্বিগ্ন। জানা যায়, ২০১৪ সালে ‘অভয়ারণ্য বাংলাদেশ এনিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন’-এর পক্ষ থেকে কুকুর নিধন বন্ধে হাইকোর্টে রিট করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ডিভিশন কুকুর নিধন নিষিদ্ধ করেন। কুকুর নিধন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় দিন দিন মানিকগঞ্জে বেড়ে চলছে বেওয়ারিশ কুকুর। শহরবাসী সকালে হাঁটাচলা করেন লাঠিহাতে। সিভিল সার্জন ডা. ইমরান আলী বলেন, ২০১৪ থেকে চলতি নভেম্বর মাস পর্যন্ত সদর হাসপাতালে কুকুরে আক্রান্ত রোগী এসেছেন প্রায় ৩৫ হাজার। এর মধ্যে ২০১৪ সালে ছিল ১০ হাজার ৭৯২ জন। ২০১৫ সালে এ সংখ্যা বেড়ে হয় ১১ হাজার ৯১৭। ২০১৬ সালের অক্টোবর পর্যন্ত কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত রোগী এসেছেন ১১ হাজার ৫০৪ জন। সিভিল সার্জন আরও জানান, স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে চাহিদার চেয়ে অনেক কম ওষুধ (ভ্যাকসিন) সরবরাহ পাওয়ায় আক্রান্ত অনেককে প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়া সম্ভব হয় না। বাইরে থেকে ওষুধ এনে তাদের সেবা দিতে হয়। কুকুরের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে জানিয়ে মানিকগঞ্জ পৌর মেয়র গাজী কামরুল হুদা সেলিম বলেন— আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় কুকুর নিধন করা তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।