শনিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

‘বউ-বাচ্চা নিয়া কষ্টে আছি’

ভাঙনকবলিত মানুষ পায়নি খাদ্য সহায়তা

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

দেশের দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন রাজবাড়ীর নদীভাঙনকবলিত মানুষ। রাজবাড়ী সদরে মিজানপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে নদীভাঙনকবলিত অসহায় মানুষগুলোর দিন কাটছে অনাহারে। এখন পর্যন্ত এই ওয়ার্ডে মাত্র ১৭ জন ত্রাণ পেয়েছেন। ওয়ার্ডের সদস্য বাদশাহ বলেন, এই এলাকায় প্রায় ৪০০ ত্রাণ দরকার। অথচ ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মাত্র ১৭ প্যাকেট ত্রাণ দেয় গত ৮ এপ্রিল। চাহিদার তুলনায় এটি নগণ্য। এ ওয়ার্ডের রামচন্দ্রপুর গ্রামের দিনমজুর আনোয়ার মিয়া বলেন, ‘এহন কেউ কামে ডাহে না, বউ-বাচ্চা নিয়া কষ্টে আছি। প্যাটের জ্বালা বড় জ্বালা, খাওন না পাইলে রাস্তায় নামা লাগবে।’ বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগমের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না বিষয়টি ঠিক নয়। আমরা ইউনিয়ন থেকে ১০০ ত্রাণের লিস্ট পাওয়া সাপেক্ষে তা বিতরণ করছি। চেয়ারম্যানরা লিস্ট দিলে ইউএনও ত্রাণ দিয়ে দেবে। রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাঈদুজ্জামান খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা সিস্টেম অনুযায়ী ত্রাণ দিচ্ছি। ইউপি চেয়ারম্যানরা ১০০ ত্রাণের লিস্ট দিলে আমরা তা সঙ্গে সঙ্গে দিয়ে দিব। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতেই এভাবে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। তবে                বিশেষভাবে কোনো ওয়ার্ডের জন্য ত্রাণ দেওয়া সম্ভব নয়।

ত্রাণের বিষয়ে মিজারপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান বলেন, জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন এটি। এখানকার একটা অংশ নদীভাঙনের শিকার। এই মুহূর্তে প্রায় ২৬০০ পরিবারে ত্রাণ দরকার। অথচ জেলা প্রশাসন  থেকে ১০০ করে ত্রাণ দিতে চায়। ১০০ ত্রাণ নিয়ে ৯ ওয়ার্ডে ভাগ করে দিতে হয়। এত বেশি চাহিদা যে, এই ১০০ করে ত্রাণ নিয়ে আরও রেষারেষির সৃষ্টি হয়।

এদিকে কর্মহীন রাজবাড়ীর পৌরসভা এলাকায় শতাধিক চা বিক্রেতা খাদ্য সহায়তা চেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেন। ত্রাণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন  জেলায় হটলাইন চালুসহ নানা উদ্যোগের কথা শোনা গেলেও রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের এমন কোনো কর্মকাে র খবর পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা চলছে সচেতন মহলে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সপ্তাহে দুদিন জেলাভিত্তিক ত্রাণ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত রাজবাড়ী জেলার জন্য বরাদ্দ চালের পরিমাণ ১০০৭ মেট্রিক টন। এছাড়া নগদ টাকার পরিমাণ ৪৫ লাখ ৪৬ হাজার টাকা এবং শিশু খাদ্য ক্রয় বাবদ বরাদ্দ ৮ লাখ টাকা।

সর্বশেষ খবর