মঙ্গলবার, ৪ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

জয়পুরহাটে ৫ হাজার শ্রমিকের মানবেতর জীবন

জয়পুরহাট প্রতিনিধি

জয়পুরহাটে ৫ হাজার শ্রমিকের মানবেতর জীবন

মহামারী করোনাভাইরাসের খড়ক নেমেছে জয়পুরহাট জেলার শ্রমিকদের ওপর। করোনাকালীন সময়ে বন্ধ সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সব ধরনের অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় জয়পুরহাটের ডেকোরেটর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকরা এখন বেকার। কাজ না থাকায় তারা অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। একইভাবে দিনমজুর, পরিবহনসহ আরও কয়েক হাজার শ্রমিকের হাতে কাজ নেই। জেলা ডেকোরেটর শ্রমিক ইউনিয়ন সূত্রে জানা গেছে, জেলা জুড়ে ডেকোরেটরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ২৫০টি। ওই সব প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত শ্রমিক রয়েছে ৭০০। করোনা ছোবলে প্রায় এক বছর ধরে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন ওই শ্রমিকরা। মাঝখানে করোনার প্রকোপ কিছুটা কমে আসলে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের কাজ করে ছিলেন ডেকোরেটর শ্রমিকরা। এখন করোনায় সব অনুষ্ঠান বন্ধ। অনুষ্ঠান বন্ধ মানে ডেকোরেটর শ্রমিক বেকার। কাজ হারিয়ে এখন তারা দিশাহারা। কীভাবে তাদের সংসার চলবে, তা তারা ভেবে পাচ্ছে না। পাশাপাশি আন্তজেলাসহ সব ধরনের বাস মিনিবাস বন্ধ থাকায় প্রায় ২ হাজার শ্রমিক এখন কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া নির্মাণ ও উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ থাকায় প্রায় ২ হাজার শ্রমিক বেকার জীবন-যাপন করছেন। জয়পুরহাট শহরের মানিক ডেকোরেটরের মালিক মানিক হোসেন জানালেন জেলায় তাদের  ছোট বড় ২৫০টি ডেকোরেটরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ওই সব ডেকোরেটরের অধীনে প্রায় ৭০০  জনের মতো শ্রমিক কাজ করেন। কিন্তু সবাই এখন বেকার। অর্ধাহারে অনাহারে দিন পার করছেন তারা। ডেকোরেটর শ্রমিক রফিকুল ইসলাম জানালেন করোনাকালীন সময়ের প্রায় সাত মাস ধরে তাদের কোনো কাজ নেই। ছোট একটি বাসা ভাড়া নিয়ে শহরে থাকেন। বাসা ভাড়া বিদ্যুৎ বিল বাকি। চারজনের সংসার আর চলে না। ধার দেনা করে আর কতদিন। তিনি আরও বলেন, অন্যান্য পেশার শ্রমিকরা অল্প বিস্তর কিছু কাজ করছেন। শুধু কাজ নেই মোটরশ্রমিক আর ডেকোরেটর শ্রমিকের। তাদের পেশাটা অনুষ্ঠান নির্ভর। অনুষ্ঠান নেই কাজ নেই। আর এক শ্রমিক শহিদুল ইসলাম বলেন, পয়লা বৈশাখে কত অনুষ্ঠান হয়। গত দুই বারে বৈশাখের কোনো অনুষ্ঠান নেই। ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো। করোনার জন্য সেগুলো বন্ধ। বসে বসে আর কয় দিন চলে।  শহরের পৌরসভা কমিউনিটি সেন্টার অনুষ্ঠানগুলোতে কাজ করতেন জাহিদুল ইসলাম-রেণুকা দম্পতি। সামাজিক, রাজনৈতিক সব অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় তারাও কাজ হারিয়েছেন। বাসা বাড়িতেও কেউ কাজ করতে ডাকে না। তাদের কেউ দেখছে না। চরম অভাবে আছেন বলে মন্তব্য করেন।

সর্বশেষ খবর