বুধবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

প্লাবন ভূমির মাছে মিটছে চাহিদা, হয়েছে কর্মসংস্থান

দাউদকান্দি (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে দেশ-বিদেশে পাঠানো হয় কুমিল্লার মাছ। এর মূল কারণ দাউদকান্দির প্লাবন ভূমিতে মাছ চাষ। প্লাবন ভূমিতে মাছ চাষে একবার দেশসেরা হয়েছিল দাউদকান্দি। কয়েকবার হয়েছে দ্বিতীয়। কর্মসংস্থান হয়েছে অনেকের। কুমিল্লা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থ বছরে দেশে মাছ উৎপাদনে কুমিল্লা দ্বিতীয় এবং প্লাবন ভূমিতে মাছ চাষে দেশসেরা হয়েছে। কুমিল্লার মধ্যে আবার সেরা দাউদকান্দি উপজেলা। জেলায় উৎপাদিত মাছের অর্ধেকের বেশি জোগান দিচ্ছে দাউদকান্দির প্লাবন ভূমির মাছ। এবার বর্ষা মৌসুমে দাউদকান্দির প্লাবন ভূমি এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে ইলিয়টগঞ্জ, আদমপুর, পুটিয়া, রায়পুরসহ বিভিন্ন গ্রামে মাছ চাষের উৎসব। জেলে ও কৃষকের পাশাপাশি ওই এলাকার শিক্ষিত তরুণরাও মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থ বছরে মাছ চাষ হয় ২ লাখ ৮৪ হাজার মেট্রিকটন। উদ্ধৃত মাছের পরিমাণ ১ লাখ ৩৭ হাজার মেট্রিকটন। জেলার মধ্যে বেশি মাছ উৎপাদন হয়েছে দাউদকান্দি উপজেলায়। প্লাবন ভূমিতে চাষ করা মাছের মধ্যে রয়েছে তেলাপিয়া, পাঙ্গাস, রুই, কাতল, মৃগেল, পুঁটি, ক্লাস কার্প, ব্রিগেট, সিলভার, কৈ, মাগুর, দেশি পুঁটি ইত্যাদি। জানা যায়, প্রকৃতিক উৎস ছাড়াও কুমিল্লার বিভিন্ন প্লাবন ভূমি, নদী, পুকুর ও জলাশয়ে উৎপাদিত মাছ জেলার চাহিদা মিটিয়ে জোগান দিচ্ছে দেশের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শরিফ উদ্দিন বলেন, কুমিল্লা জেলায় মোট পুকুর-দিঘী সংখ্যা ৮৪ হাজার ৪২৮টি। নদী রয়েছে ১৩টি। বিল ও প্লাবন ভূমি আছে ২২ হাজার ৪৬২ হেক্টর। কুমিল্লায় মোট ৪৯ হাজার ৭৫৮ হেক্টর পুকুর নদী ও জলাশয়ে মাছ উৎপাদন করা হয়। কুমিল্লার প্রথম প্লাবন ভূমিতে মাছ চাষ শুরু হয় দাউদকান্দি উপজেলায় যা সারা দেশে মডেল। ১৯৮৬ সালে এ উপজেলায় প্রথম প্লাবন ভূমিতে মাছ চাষ শুরু করেন ধনুরখোলা গ্রামের সুনীল কুমার রায়।

পরে অন্যরা এগিয়ে আসেন। এখন প্লাবন ভূমিতে মাছ চাষ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। দাউদকান্দি ছাড়াও কুমিল্লার মেঘনা, হোমনা, মুরাদনগর, তিতাস উপজেলায় প্লাবন ভূমিতে মাছ চাষ হচ্ছে। স্থানীয় মাছ চাষি আলী আহম্মেদ বলেন, প্লাবন ভূমিতে মাছ চাষের ফলে দাউদকান্দি ও আশপাশের মানুষের অভাব ঘুচেছে। হাসি ফুটেছে তাদের সংসারে। কমেছে বেকারত্ব। দাউদকান্দি উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা নাজমা আক্তার বলেন, এ উপজেলায় ৩ হাজার হেক্টর প্লাবন ভূমিতে মাছ চাষ হয়। সেই সঙ্গে মাছের উৎপাদনও বাড়ছে।

সর্বশেষ খবর