শুক্রবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

গাছতলায় শিশুদের চিকিৎসা

বেড়েছে শ্বাসকষ্ট জ্বর সর্দি, হাসপাতালে শয্যা সংকট

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

গাছতলায় শিশুদের চিকিৎসা

ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের বাইরে গাছতলায় অসুস্থ সন্তানদের নিয়ে অভিভাবকরা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ঠাকুরগাঁওয়ে বেড়েছে শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দি, কাশি ও ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা। এসব রোগীর অধিকাংশই শিশু। জেলা আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে স্থান সংকুলান না হওয়ায় মেঝে, বারান্দা এমনকি গাছতলায় চলছে শিশুদের চিকিৎসাসেবা। হাসপাতালের মূল ফটকের পাশে খোলা জায়গায় যেখানে গাছের ছায়া রয়েছে সেখানে বিছানা পেতে শুয়ে-বসে শিশুদের চিকিৎসা করাচ্ছেন অভিভাবকেরা।

হাসপাতালের ৪৫ শয্যার শিশু ওয়ার্ডে গত বুধবার ভর্তি ছিল ২০৩ জন শিশু। গতকাল এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮৭ জনে। এসব শিশুর অধিকাংশই শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দি, কাশি ও ডায়রিয়ায় ভুগছে। সরেজমিন দেখা যায়, এক শয্যায় দুই থেকে তিন শিশুকে রাখা হচ্ছে। ওয়ার্ডের মেঝে, বারান্দা ও অভিভাবকদের বসার জায়গায় রেখেও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে শিশুদের। ওই সব জায়গায়ও যারা স্থান পাননি তারা আশপাশের ভবন, এমনকি গাছতলায় বিছানা পেতে সন্তানদের চিকিৎসা করাচ্ছেন। রাতে তারা অবস্থান করেন হাসপাতালের অন্য পাকা জায়গায়। ওয়ার্ডের এক বিছানায় শিশুদের কোলে নিয়ে বসে আছেন চারজন নারী। তাদের একজন সবেদা খাতুন। তিনি বলেন, তারা চারজন বিছানা ভাগাভাগি করে শিশুদের চিকিৎসা নিচ্ছেন। দিনের বেলা এদিক-ওদিক গিয়ে সময় কেটে যায়। রাতে সমস্যায় পড়তে হয়। জায়গা না থাকায় শিশুদের নিয়ে পালা করে ঘুমাতে হচ্ছে। শিশু ওয়ার্ডের ৫০ মিটারে দূরে হাসপাতালের ভেষজ বাগানের গাছের ছায়ায় ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনের ফাঁকা স্থানে অনেকে শিশুদের নিয়ে অবস্থান করছেন। এমনই একজন পঞ্চগড়ের বোদা থেকে আসা মোমেনা বেগম। তিনি বলেন, ওয়ার্ডের চেয়ে গাছতলাতেই ভালো আছি। ওয়ার্ডে যেখানে ২০ জন মানুষ থাকার কথা সেখানে থাকেন ১০০ জন। গরমে টেকা যায় না। আধুনিক সদর হাসপাতালের নবজাতক ও শিশু বিভাগের চিকিৎসক শাহজাহান নেওয়াজ বলেন, হাসপাতালে শিশু রোগীর চাপ অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে এমনটা হচ্ছে। এ সময় অভিভাবকদের বেশি সতর্ক থাকতে হবে। শিশুদের প্রচুর তরল ও ভিটামিন সি-জাতীয় খাবার দিতে হবে। শিশু ঘেমে গেলে কাপড় পরিবর্তন ও ঘাম মুছে দিতে হবে। তিনি বলেন, স্বাভাবিক সময়ে ৬০-৭০ শিশু এখানে ভর্তি থাকে। এখন থাকছে ১৭০-১৮০ জন। ঠাকুরগাঁওয়ের সিভিল সার্জন ডা. মাহফুজার রহমান সরকার বলেন, হাসপাতালে শিশু রোগীর সেবা মানসম্মত হওয়ায় আশপাশের জেলার অনেক অভিভাবক তাদের সন্তান এখানে চিকিৎসা করান। এ কারণে এই হাসপাতালে সব সময় শিশু রোগীর চাপ থাকে। শয্যার তুলনায় রোগী কয়েক গুণ বেশি হওয়ায় গাদাগাদি করে, মেঝেতে ও বারান্দায় থেকে চিকিৎসাসেবা নিতে হচ্ছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর