বৃহস্পতিবার, ৪ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

এমআরটি জটিলতায় নাসিকের শত কোটি টাকার প্রকল্প

এম এ শাহীন, সিদ্ধিরগঞ্জ

এমআরটি জটিলতায় নাসিকের  শত কোটি টাকার প্রকল্প

সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল গলা সেতু থেকে গোদনাইল পর্যন্ত সওজ-এর ভূমিতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন কয়েক বছর ধরে ডিএনডি খালের ওপর শত কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে ছয়টি সেতু নির্মাণসহ খাল খনন ও অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ করছে। জাইকার অর্থায়নে ২০১৯ সাল থেকে ‘সিদ্ধিরগঞ্জ লেক’ নামের এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সিটি করপোরেশন। সড়ক ও জনপথ অধিদফতর সেখানে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারের জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এমআরটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ার পরিকল্পনার বিষয় জানিয়ে সেতু নির্মাণ না করতে চিঠি দিয়েছে। ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) সভা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কাজ স্থগিতের। কিন্তু এসব আপত্তি উপেক্ষা করে নাসিক তাদের প্রকল্পের কাজ চলমান রেখেছে। এতে করে ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে জটিলতা তৈরি এবং সরকারের অর্থের ক্ষতি হবে। সওজ-এর তথ্যে জানা গেছে, ২০১৯ সালের অক্টোবর ও নভেম্বরে নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগ সিটি করপোরেশনের মেয়রকে দুটি চিঠি দেয়। ২০১৯ সালের ৩০ অক্টোবর দেওয়া চিঠিতে সওজ উল্লেখ করেছে, শিমরাইল-আদমজী ইপিজেড-হাজীগঞ্জ সড়কটি ঢাকা সার্কুলার এবং এমআরটি প্রকল্পের এলাইনমেন্টের আওতাভুক্ত। প্রকল্পের আওতায় ৫৫.৫০ মিটার প্রশস্ততায় ফুটপাথ, সার্ভিসলেনসহ আট লেনের সড়ক নির্মাণ করা হবে এবং এমআরটি প্রকল্পের কাজ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রকল্প দুটি প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত এবং জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার সমন্বয়ে এক যুগের বেশি সময় ধরে সমীক্ষা করে এলাইনমেন্ট ও ডিজাইন চূড়ান্ত করা হয়েছে। যা সহজে পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। কিন্তু উক্ত এলাইনমেন্টর এর ভিতরে সওজের অধিগ্রহণকৃত ভূমিতে সিটি করপোরেশন কয়েকটি সেতু নির্মাণ করছে। সিটি করপোরেশন কর্তৃক এই সেতুগুলো নির্মাণ করা হলে সওজের গৃহীত জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়নে জটিলতার সৃষ্টি হবে। এ কারণে ভবিষ্যৎ জটিলতা এড়াতে সিটি করপোরেশনকে সেতু নির্মাণ থেকে বিবরত থাকতে অনুরোধ করা হয়। সওজ ২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর মেয়রকে লেখা অপর চিঠিতে উল্লেখ করেন, সওজ-এর গৃহীত প্রকল্পে এশিয়ান ইনফ্রাক্টচার ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক অর্থায়ন করবে এবং দ্রুতই কাজ শুরু হবে। এর ফলে সিটি করপোরেশনের নির্মাণাধীন ছয়টি সেতু ভেঙে ফেলতে হবে। এতে সরকারের অর্থের অপচয় হবে। এ চিঠিতেও সওজ সিটি করপোরেশনকে সেতুগুলোর নির্মাণ কাজ বন্ধের অনুরোধ জানায়। পরবর্তীতে এ বিষয়টি ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ এর ১৩তম সভায় উত্থাপিত হয়। গত বছরের ১ মার্চ সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন, রেলপথ মন্ত্রণালয়, সড়ক ও জনপথ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিসহ ডিটিসিএ সংশ্লিষ্টরা অংশগ্রহণ করেন। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন কর্তৃক নারায়ণগঞ্জ শহরের লেকের ওপর ব্রিজ নির্মাণ আপাতত স্থগিত থাকবে। ডিটিসিএ এ বিষয়টি সরেজমিনে দেখে প্রতিবেদন দাখিল করবে। কিন্তু ওই সিদ্ধান্তের পরও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ছয়টি সেতু নির্মাণ কাজ বন্ধ করেনি। বরং সওজের ভূমি আরও গভীর করে খনন করে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এই ছয়টি সেতু নির্মাণেই ব্যয় হচ্ছে ৩৮ কোটি টাকার বেশি।

সর্বশেষ খবর