বুধবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

দখল-দূষণে তুরাগ নদ

টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি

দখল-দূষণে তুরাগ নদ

দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে তুরাগ নদের অস্তিত্ব। নদের দিকে তাকালে মনে হয় যেন ময়লার ড্রেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এর মূল কারণ দখল-দূষণে নদের নাব্য হারিয়ে যাওয়া। জানা যায়, এক সময়ে বিভিন্ন এলাকার মানুষ ট্রলারে করে ঐতিহ্যবাহী টঙ্গী বাজার আসতেন কেনাকাটা করতে। নৌ-পথে আসা বিভিন্ন মামামাল কিংবা মানুষ চলাচলের সুবিধার্থে টঙ্গীর পাগাড় এলাকায় কয়েক বছর আগে প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় নদী বন্দর। নাব্য সংকটে তুরাগ নদ সরু হয়ে যাওয়ায় বন্দরটি অকেজো হয়ে পড়ে আছে বছরের পর বছর। নদী বন্দরে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বসে বসে বেতন নিচ্ছেন। বন্দরটি এখন পরিণত হয়েছে মাদকসেবীদের আখড়ায়। সূত্র জানায়, গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা ওয়াশিং, ডাইং, ওষুধ, ক্যামিকেল কারখানার বিষাক্ত তরলবর্জ্য ও ময়লা-আবর্জনায় দূষণ হচ্ছে নদীর পানি। কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য কৃষি জমি, খাল ও নদে নির্গত হওয়া এবং যেখানে-সেখানে আবর্জনা ফেলায় জীববৈচিত্র্য ক্ষতির মুখে পড়েছে। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ২০১০ এর ১২ (১) ধারা অনুযায়ী পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করা যাবে না। অথচ এ নিয়ম মানছেন না অনেকে। বিভিন্ন কারখানায় নেই ইফুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (ইটিপি) বা বর্জ্য শোধনাগার। নেই পরিবেশ ছাড়পত্র। অনেক কারখানায় ইটিপি থাকলেও শতভাগ ব্যবহার হচ্ছে না। বাইপাস লাইনে তরলবর্জ্য নদে নির্গত হচ্ছে। যে কারণে তুরাগ নদের পানি ব্যবহারের অনুপযোগী  হয়ে পড়েছে। কেউ কেউ ইটিপি স্থাপনের নামে বছরের পর বছর কালক্ষেপণ করেছেন। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে  পরিবেশ অধিদফতর অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায় করলেও তা প্রভাব ফেলছে না।

স্থানীয় বাসিন্দা ফয়সাল আহম্মেদ সজীব বলেন, তুরাগ নদেও পানি ময়লা-আবর্জনা আর দুর্গন্ধের কারণে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নদের অস্তিত্ব ফিরিয়ে আনতে দূষণ রোধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এরপর দখল রোধ ও খনন কাজ করতে হবে। টঙ্গী নদী বন্দরের সহকারী পরিচালক রেজাউর করিম বলেন, তুরাগ নদের তীর দখলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। ইতিমধ্যে উচ্ছেদ অভিযানের জন্য একজন ম্যাজিস্ট্রেট চাওয়া হয়েছে- পেলেই কার্যক্রম বাস্তবায়ন হবে। আর নদ দূষণের বিষয়ে পরিবেশ অধিদফতর বলতে পারবে। গাজীপুর পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক নয়ন মিয়া বলেন, কারখানা মালিকদের কারও কারও ইটিপি আছে আবার অনেকেরই নেই। যারা বিষাক্ত তরল বর্জ্য নদে ফেলছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর