মঙ্গলবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

প্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণ সালিশে ৮ হাজার টাকায় নিষ্পত্তি

নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁর মান্দায় প্রতিবন্ধী এক শিশু শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে জানা গেছে। অসুস্থ শিশুটিকে কোনো হাসপাতালে না নিয়ে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি ধামচাপা দিতে ৮ হাজার টাকায় নিষ্পত্তি করে দেন স্থানীয় মাতবররা। ঘটনাটি প্রকাশ হয়ে পড়লে এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা জানান, ৬ জানুয়ারি মাছ ধরার কথা বলে খালের পাড়ের একটি সরিষার খেতে নিয়ে শিশুটিকে ধর্ষণ করে আশরাফুল ইসলাম ওরফে সুটকা নামের এক ব্যক্তি। সম্পর্কে তিনি ওই শিশুটির দাদু হন। ভিকটিম শিশুটির মা জানান, তার মেয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধী ও স্থানীয় বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ৬ জানুয়ারি সকালে বাড়ির অদূরে  আলুখেত দেখতে যায়।

সেখানে থেকে মাছ ধরার কথা বলে আমার মামাশ্বশুর সুটকা মেয়েকে খালের পাড়ে নিয়ে যায়। পরে পাশের একটি সরিষা খেতে নিয়ে তাকে পাশবিক নির্যাতন করেন মামাশ্বশুর। তিনি আরও বলেন, পরে অসুস্থ মেয়েকে বাড়ি পৌঁছে দেন মামা শ্বশুরের পরিবারের লোকজন। এ সময় আমার স্বামী বাড়িতে ছিলেন না। রাতে বাড়ি ফিরলে ঘটনার বিষয়ে তাকে অবহিত করি। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দিয়ে তাকে সুস্থ করে তোলা হয়েছে। ভিকটিমের দাদা নেকবর আলী মোল্লা বলেন, নাতনিকে ধর্ষণের ঘটনায় ৯ জানুয়ারি রাতে প্রতিবেশী আনোয়ারা বিবির নেতৃত্বে তার বাড়িতে সালিশের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে এলেঙ্গা গ্রামের নাসির উদ্দিন, স্থানীয় কামাল হোসেন, সৈয়দ আলী সরদার, দীনু কবিরাজ, আবদুল জলিল, বাবুল হোসেন লেদু, জিন্নাতুন নেছাসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। তিনি আরও বলেন, সালিশে ধর্ষণের কথা স্বীকার করায় তাকে জুতাপেটা করেন মাতবররা। পরে শিশুটির চিকিৎসার জন্য ৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সালিশের আয়োজক আনোয়ারা বিবি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি নিজেদের মধ্যে হওয়ায় নিষ্পত্তি করে দেওয়া হয়েছে। ধর্ষণের ঘটনা সালিশে নিষ্পত্তি করে দেওয়া যায় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা গ্রামের মানুষ আইন বিষয়ে এত কিছু জানি না। মান্দা থানার ওসি শাহিনুর রহমান বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা আমার জানা নেই। কেউ অভিযোগও করেননি। খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর