শুক্রবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

নদীর প্রবাহ বন্ধ করে রাস্তা

সেচের পানির সংকট ॥ বিপাকে মৎস্যজীবীরা

পাবনা প্রতিনিধি

নদীর প্রবাহ বন্ধ করে রাস্তা

পাবনার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের চর ভগীরথপুর গ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের পার্শ্ববর্তী পদ্মার শাখা নদীতে আড়াআড়িভাবে তৈরি করা হয়েছে রাস্তা। এতে ব্যাহত হচ্ছে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ। মাছ শিকার করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন মৎস্যজীবীরা। সেচের পানি সংকটে পড়েছেন চাষিরা। ঈশ্বরদী উপজেলায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাশ দিয়ে পদ্মার শাখা নদীটি পশ্চিম বাহিরচর হয়ে ২৫ কিলোমিটার ঘুরে আবার মূল পদ্মায় মিলিত হয়েছে পাবনা সদরের চরশ্রীকৃষ্ণপুরে। বর্ষায় নদীটি বেগবান থাকলেও শীতে পানি কমে যায়। পানি কমার সুযোগে ভাটায় মাটি নেওয়ার জন্য চর ভগীরথপুর গ্রামে শাখা নদীটির বুক চিরে বানানো হয়েছে রাস্তা। গত বুধবার চর ভগীরথপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, নদীতে মাছ ধরছেন মৎস্যজীবী রুহুল আমিন। তিনি বলেন, ১০ বছর ধরে এই নদীতে মাছ ধরি। এই সময়ে আগে বোয়াল, ট্যাংরা, বাইম, চিংড়িসহ নানা প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত। রাস্তা তৈরির পর কোনো মাছই ধরা পড়ছে না। সেচের পানি পাচ্ছেন না চাষিরা। কৃষক আলম মৃধা বলেন, নদীতে রাস্তা তৈরির ঘটনা অবিশ্বাস্য। আরেক কৃষক মোজাম্মেল সরদার বলেন, এ এলাকার এখন প্রধান সমস্যা ইটভাটা। ফসলি জমিতে ভাটা হচ্ছে। সেই ভাটার জন্য নদী থেকে মাটি তুলছে। এ কারণে বর্ষায় নদী ভাঙন দেখা দেয়। এখন আবার নদীতে রাস্তা তৈরি করায় সেচের পানির সংকট দেখা দিয়েছে। নদীতে রাস্তা তৈরির সঙ্গে জড়িত জুয়েল প্রামাণিক বলেন, ‘নদীর ওপর রাস্তা করছি, কারণ ওপারে জয়েনপুর থেকে মাটি কাটব। রাস্তা বানানোর কাজ শেষ হলে মাটি কাটা শুরু হবে। রাস্তা তৈরিতে মানুষের উপকার হয়েছে। তারা এখন সহজেই নদী পার হতে পারছেন।’ ‘বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলন পাবনা’ শাখার সভাপতি খন্দকার নাজমুল হক বলেন, মাটি কাটার জন্য প্রবহমান নদী বন্ধ করে যারা রাস্তা তৈরি করেছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। পাবনা সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাউছার হাবিব বলেন, রাস্তা তৈরির বিষয়ে জানতে পেরে আমরা অভিযান চালিয়েছি। তখন ঘটনাস্থল মাটি কাটার যন্ত্র বা মাটি কাটায় জড়িত কাউকে না পাওয়ায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। চরের জমি থেকে মাটি কাটা বন্ধের                 নির্দেশ দিয়েছি। স্থানীয়দেরও সতর্ক করা হয়েছে। দ্রুত নদীর বুক থেকে রাস্তা অপসারণ করা হবে। হেমায়েতপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মালিথা বলেন, গ্রামবাসী নদী পার            হতে রাস্তাটি ব্যবহার করছে। তাদের অনুরোধে তাৎক্ষণিক অপসারণ করা হয়নি। পারাপারের সাঁকো নির্মাণ করে দু-এক দিনের মধ্যে রাস্তাটি অপসারণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর