রবিবার, ১ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ময়লা-আবর্জনায় তলিয়ে গেছে চাষাবাদের জমি

উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ময়লা-আবর্জনায় তলিয়ে গেছে চাষাবাদের জমি

ধান কাটার মৌসুম এখন অথচ কৃষক সিরাজুল হক মাথায় হাত দিয়ে এক ভয়াবহ দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছেন। বৃষ্টি হলে যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ময়লা-আবর্জনার এসে তলিয়ে যাবে চাষাবাদ করা এই ধানিজমি। এ নিয়ে মহা টেনশনে সিরাজসহ অন্যান্য কৃষকরা। উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পের সঙ্গে লাগোয়া পশ্চিমপাড়া ও লম্বাশিয়ার বিশাল এলাকা জুড়ে ধানি জমিতে মলমূত্র, প্লাস্টিকের বোতল, ইনডেক্সসনের সুইচ, পচনশীল ময়লা আবর্জনায় ভরপুর। মূলত রোহিঙ্গা শিবিরের কয়েকটি ক্যাম্প থেকে এসব ময়লা আবর্জনা ও মানববর্জ্য সরাসরি কৃষিজমিতে ফেলা হচ্ছে।  ডি ফোর, ফাইভ, ওয়ান ও টু ইস্টসহ পাঁচটি ক্যাম্পের বর্জ্য ফেলা হয় এই কৃষিজমিতে। জমির মালিকরা বলছেন শত একর ধানিজমি রোহিঙ্গা আসার পর থেকে গত ৫ বছর ধরে চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে গেছে। কিন্তু এ জমিতে চাষাবাদ করে পুরো বছরের সংসার চলে তাদের। কৃষকরা আরও বলছেন পশ্চিম পাড়া ও লম্বাশিয়ার এই  বিচ্ছিন্ন জমিতে ধান চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করত এখানকার চাষিরা। কিন্তু গেল ৫ বছরে ধান চাষ বন্ধ থাকায় আর্থিকভাবে কষ্টে আছি। সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি জানানোর পরও তারা কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

এ বিষয়ে উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য (কুতুপালং) হেলাল উদ্দিন বলেন, একটি ইউ ড্রেন দিয়ে পানি নিষ্কাশনের জন্য নানা জায়গায় আবেদন করলেও সাড়া দেয়নি কেউই। দফায় দফায় কৃষকদের নিয়ে প্রশাসন, এনজিও কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে গিয়েও কোনো সাড়া মেলেনি বলে জানান এ জনপ্রতিনিধি। উখিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গার কারণে স্থানীয় জনগোষ্ঠী এমনিতে ক্ষতিগ্রস্ত। তার সঙ্গে যে সমস্ত চাষাবাদের জমি রয়েছে তাও রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ময়লা-আর্বজনায় অনাবাদি হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, এনজিও, আইএনজিও সংস্থাগুলো রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কোটি কোটি টাকা খরচ করলেও স্থানীয়দের জন্য একটি ড্রেনই নির্মাণ করছে না। যার কারণে সামনের বর্ষা মৌসুমে শত শত একর ধানী জমি অনাবাদি হয়ে পড়বে। এ বিষয়ে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরান হোসেন সজীব বলেন, এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করেছি। এছাড়া ও চাষাবাদের যেন ক্ষতি না হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট ক্যাম্প প্রশাসন এবং এনজিও সংস্থাদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করছি।

সর্বশেষ খবর