মঙ্গলবার, ২৮ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

মহাসড়কের পাশে হাটবাজার ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন চলাচল

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

মহাসড়কের পাশে হাটবাজার ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন চলাচল

দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়েই চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ মহাসড়কের পাশে বিভিন্ন স্থানে হাটবাজার বসায় প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। দুর্ঘটনা কমানো এবং যানবাহনের নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিত করতে বাজার এড়িয়ে বাইপাস তৈরি করা হলেও সেই বাইপাস ঘিরেও গড়ে উঠছে হাটবাজার। অন্যদিকে আসন্ন আমের মৌসুমে কানসাটে স্থায়ী আমবাজার নির্মাণ না হওয়ায় আবার মহাসড়কের পাশে আমবাজার বসবে। এর ফলে বড় ধরনের যানজটের সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বছরের পর বছর এই হাটবাজার চলতে থাকলেও অন্যত্র সরিয়ে  নেওয়ার কথা ভাবছে না স্থানীয় প্রশাসন। জানা গেছে, সোনামসজিদ স্থলবন্দর ও কানসাটকে ঘিরে বাণিজ্যিক এলাকার কারণে প্রতিদিন হাজার হাজার ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু ব্যস্ততম মহাসড়কের পাশে, মহারাজপুর, রানিহাটি ও ছত্রাজিতপুর এলাকায় সপ্তাহে দুই দিনসহ অন্যান্য দিনে হাটবাজার বসে। ফলে এসব স্থানে ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। স্থানীয়রা জানান, এই স্থানগুলোতে হাটবাজার বসার কারণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা করেন ক্রেতারা। অন্যদিকে হাটের দিন ভোগান্তিতে পড়তে হয় যানবাহন চালকদের। কারণ ক্রেতারা না বুঝেই অনেক সময় মহাসড়ক পার হন। এতে দুর্ঘটনায় পতিত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়েই চলেছে। এলাকাবাসী জানান, সদর উপজেলার মহারাজপুর, শিবগঞ্জ উপজেলার নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়নের রানিহাটি বাজার ও ছত্রাজিতপুর ইউনিয়নের ফুলতলা হাটবাজার দীর্ঘদিন থেকে সোনামসজিদ মহাসড়কের পাশে বসছে। রানিহাটি হাট সপ্তাহে শনি ও মঙ্গলবার। এ ছাড়াও বাজার প্রতিদিন বসে। পাশাপাশি ছত্রাজিতপুর ফুলতলা এলাকায় সপ্তাহে রবিবার ও বৃহস্পতিবার হাট বসে। গ্রামের লোক সপ্তাহের হাটে নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল নিতে আসেন। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার দুই পাশেই বাজার বসেছে। কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে বিভিন্ন পসরা সাজিয়ে সবই বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা রাস্তা পার হয়ে দুই পাশ থেকে এসব পণ্য কিনছেন। এ সময় অনেক যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। আবার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে রাস্তার এপাশ-ওপাশ যাওয়া-আসা করছেন। ওই এলাকার কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, সোনামসজিদ স্থলবন্দর গতিশীল হওয়ায় এ মহাসড়ক এখন ব্যস্ততম সড়ক। তাই প্রতিদিনই পণ্য বোঝাই অসংখ্য ট্রাক, লরি, বাসসহ অন্যান্য যান এ পথে যাতায়াত করে। এদিকে একজন ট্রাকচালক জানান, এই মহাসড়কের দুই পাশের বাজারের ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলো প্রায়ই রাস্তার ওপরে উঠে আসে। ফলে বাজার করতে আসা লোকজনের ভিড়ে গাড়ি চালানো যায় না।

খুব আতঙ্কের মধ্যে গাড়ি চালাতে হয়। কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি, মহাসড়কের পাশ থেকে হাটবাজার নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করা  হোক। এ ছাড়া আম মৌসুমে কানসাটে মহাসড়কের পাশে যেভাবে আমের বাজার গড়ে ওঠে তাতে গাড়ি চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। এ বিষয়ে নয়ালাভাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাকুল ইসলাম পিন্টু জানান, সপ্তাহের বাজার করতে এলাকাবাসীকে এখানে আসতেই হয়। এ রকম ব্যস্ত মহাসড়কের পাশে বাজার মানেই তো দুর্ঘটনার ঝুঁকি। ছোটখাটো দুর্ঘটনা তো প্রতিনিয়ত ঘটছেই। তবে মহাসড়কের পাশে সরকারি কিছু খাস জায়গা রয়েছে, সেখানে বাজার স্থানান্তরের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। অন্যদিকে ছত্রাজিতপুর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম রাব্বানী জানান, ছত্রাজিতপুর ফুলতলা এলাকায় মার্কেটের  নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে বাজারগুলো সরিয়ে নেওয়া হবে। এ বিষয়ে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, বাজার যেন না বসে সেজন্য একাধিকবার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তবে ছত্রাজিতপুরে মার্কেট নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। সেখানে বাজার স্থানান্তর করা হবে এবং রানিহাটি এলাকায় বহুতল ভবন বিশিষ্ট মার্কেট নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। দ্রুত হাটবাজার দুটি স্থানান্তর করা সম্ভব হবে।

সর্বশেষ খবর