রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

১০ বছরেও মেরামত হয়নি সেতু

ভেঙে পড়েছে সাঁকোটিও, বেড়েছে দুর্ভোগ

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

১০ বছরেও মেরামত হয়নি সেতু

সারিয়াকান্দির কালারতাইড় সেতুর সংযোগ সড়ক বন্যায় ভেসে যাওয়ার পর বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করছেন স্থানীয়রা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বগুড়া সারিয়াকান্দির কালারতাইড় সেতুর এক পাশের বাঁশের সাঁকো ভেঙে পড়েছে। ৯ গ্রামের বাসিন্দাদের চলাচলের একমাত্র সেতুটি ভেঙে পড়ায় বিচ্ছিন্ন রয়েছে যোগাযোগ। সৃষ্টি হয়েছে জনদুর্ভোগ।

জানা যায়, সারিয়াকান্দির কুতুবপুর ইউনিয়নের শোলারতাইড় গ্রামের কালারতাইড় পাড়ায় বাঙালির শাখা নদীর ওপর ১৯৯৭ সালে নির্মাণ হয় সেতু। সেতুটির উভয় পাশে রয়েছে পাকা রাস্তা। নদীর দক্ষিণ পাড়ে শোলারতাইড়সহ নয়টি গ্রামের অবস্থান। এসব গ্রামের ৯০ শতাংশ মানুষ কৃষি কাজে জড়িত। এলাকায় ধান, পাট, কলা, মরিচসহ বিভিন্ন সবজি চাষ হয়। কৃষিপণ্য বেচাকেনা ও অন্যান্য প্রয়োজনে এলাকাবাসী এই সেতু হয়ে উপজেলা সদরে যাতায়াত করতেন। ২০১২ সালে বন্যায় সেতুটির দক্ষিণ অংশের সংযোগ সড়ক ভেঙে বন্ধ হয়ে যায় চলাচল। এলাকাবাসী তখন বিকল্প হিসেবে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে কুতুবপুর হয়ে উপজেলা সদরে যাতায়াত শুরু করেন। কয়েক বছর আগে ভাঙা অংশে বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন স্থানীয়রা। এতে এক অংশ রড সিমেন্টের আরেক অংশ সাঁকো হয়ে যায়। ওই সাঁকো দিয়ে এলাকাবাসী ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে চলাচল করতেন। গত ২০ সেপ্টেম্বর সাঁকো ভেঙে পড়ে আবার চলাচল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। শোলারতাইড় গ্রামের আবদুর রহমানের ছেলে মামুনুর রশীদ জানান, ঘটনার দিন স্থানীয় কৃষক বাবলু মিয়া সাঁকো দিয়ে পার হওয়ার সময় ভেঙে নিচে পড়ে যায়। খবর পেয়ে তাকে দ্রুত উদ্ধার করা হয়। বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি তবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। গ্রামবাসী ওই স্থানে নতুন ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন। আশরাফুল ইসলাম নামে একজনের ভাষ্য, বন্যায় সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পর উপজেলা প্রশাসনকে দফায় দফায় জানানো হয়েছে। কাজের কাজ হয়নি। প্রায় ১১ বছরেও ব্রিজটি মেরামত না করায় ৯ গ্রামের মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। স্থানীয় কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সুজন বলেন, সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে যাওয়ার কারণে কাজলা, ছোট কুতুবপুর এবং বৃহৎ শোলারতাইড় গ্রামের হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগে রয়েছেন। এর আগেও এখানে একাধিক দুর্ঘটনা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রকৌশলী তুহিন সরকার জানান, দুর্ঘটনার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। সেতুটি প্রায় অকেজো হয়ে গেছে। এক বছর আগে ঢাকা থেকে আসা এলজিইডির প্রতিনিধি দল সেতুটি পরিদর্শন করে সেখানে ৬৬ মিটার নতুন সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। ডিজাইনের কাজও সম্পন্ন হয়েছে। এটি পুরনো রেটে ইস্টিমেট করা ছিল, তাই ফেরত এসেছে। নতুন রেটে ইস্টিমেট করে পুনরায় পাঠানোর কার্যক্রম চলছে। সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেজাউল করিম বলেন, নতুন সেতুর নির্মাণকাজ দ্রুত শুরু করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলা হবে। সাঁকোর ভেঙে যাওয়া অংশ দ্রুত মেরামত করে দেওয়া হবে। বগুড়া-১ আসনের সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নান বলেন, ২২ সেপ্টেম্বর সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সেতুটি দ্রুত নির্মাণের ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানানো হয়েছে। তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।

 

সর্বশেষ খবর