শনিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা কার্যালয়ে ঝুলছে তালা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা কার্যালয়ে ঝুলছে তালা

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় বিভিন্ন সেবা ও চাকরি দেওয়ার কথা বলে কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে বেসরকারি সংস্থা এনভায়রনমেন্ট অ্যাওয়ারনেস অ্যান্ড হিউম্যানিটি সোসাইটি (ইয়াস)। এনজিওটির বাউরা ইউনিয়ন ও পাটগ্রাম পৌর শহরের বাইপাস মোড়ের কার্যালয়ে ঝুলছে তালা। জানা যায়, গত জানুয়ারিতে ইয়াস পাটগ্রামের বাউরা ইউনিয়নে শাখা ও কয়েক মাস পর পাটগ্রাম পৌরসভায় আইন সহায়তা সংস্থা কার্যালয় খোলা হয়। শুরু থেকে বিভিন্ন ইউনিয়নে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু করার বিষয়ে প্রচারণা চালাতে থাকে সংস্থার লোকজন। একপর্যায়ে ১২৪টি বিদ্যালয়ে ১২৪ জন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে শিক্ষকদেরই বাড়িতে বিদ্যালয় চালু করা হয়। শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের সময় প্রত্যেকের কাছ থেকে নেওয়া হয় ২৫-৩০ হাজার টাকা। মাসে তাদের বেতন ধরা হয় ৫ হাজার টাকা করে। পাশাপাশি হতদরিদ্র পরিবারকে পাকাবাড়ি নির্মাণ করে দেওয়ার কথা বলে ৫০টি পরিবারের কাছ থেকে আদায় করা হয় ১০ হাজার টাকা করে।

অন্যদিকে পৌর শহরের বাইপাস মহাসড়কের পাশে খোলা হয় আইন সহায়তা সংস্থা কার্যালয়। এ কার্যালয়ে ২৫ জনকে ১ থেকে দেড় লাখেরও বেশি করে টাকা নিয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিদের অভিযোগ, ইয়াস এনজিও পাটগ্রাম উপজেলায় আনেন সরকারেরহাট এলাকার ফরিদুল ইসলাম। তার মাধ্যমে বিদ্যালয় চালু, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের বিষয়টি জানতে পেরে টাকা দিয়ে চাকরি নেন স্থানীয়রা। একই এলাকার মাঠকর্মী মিনহাজুল ইসলাম মিলন বলেন, ইয়াস অনেক লোভ দেখিয়ে টাকা নিয়ে আমাদের নিয়োগ দেয়। বেকার ছেলে হিসেবে আমিও ২০ হাজার টাকা দিয়েছি। এখন ইয়াসের কোনো খোঁজ নেই। যোগাযোগ করে টাকা চাইলে ভয়, হুমকি দেখায় তারা।

বাউরা ইউনিয়নের নবীনগর গ্রামের শিক্ষক সম্পা বেগম বলেন, নিজ বাড়িতে প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু করে দুই মাস পরিচালনা করা হলেও ইয়াস সংস্থা কোনো বই-খাতা দেয়নি। উপরন্তু প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ভর্তির জন্য ১০০ টাকা ও উপবৃত্তির কথা বলে ৫০ টাকা করে তুলে ইয়াস কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষক হিসেবে চাকরি নেওয়ার সময় দিয়েছি ২৫ হাজার টাকা। ইয়াসের পাটগ্রাম উপজেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক ফরিদুল ইসলাম বলেন, জেলা পরিদর্শক আরিফুজ্জামান চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নিয়েছেন। প্রধান কার্যালয়ে জানিয়েছি। তারা আরিফুজ্জামানকে বেঁধে টাকা আদায় করতে বলেছেন। এরপর আরিফুজ্জামান আমাদের ২১ লাখ টাকার চেক দিয়েছেন। ইয়াসের লালমনিরহাট জেলা পরিচালক দুর্নীতির কথা স্বীকার করে বলেন, সরঞ্জাম বাবদ কিছু টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও মাঠকর্মী ও পরিদর্শকরা অনেক বেশি টাকা আদায় করেছেন। জামানত বা চাকরি বাবদ টাকা নেওয়া হয়নি। ফরিদুল ইসলাম, অন্য মাঠকর্মী এবং পরিদর্শকরা নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। ইয়াসের মহাসচিব জাহেদ হাসান বলেন, আমরা লালমনিরহাটে একটা শাখা খোলার অনুমতি দিয়েছিলাম। কিন্তু পুরো জেলায় অফিস খুলে অনেকের কাছ থেকে নাকি টাকা নেওয়া হয়েছে। আমরা লিখিতভাবে বিভিন্ন দফতরে জানিয়েছি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর