শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা
ঝালকাঠি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র

অর্ধেক জনবলে চলছে চিকিৎসা

ঝালকাঠি প্রতিনিধি

অর্ধেক জনবলে চলছে চিকিৎসা

জনবল সংকটে ঝালকাঠি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগীরা। প্রতিষ্ঠার পর থেকে নিজস্ব দুজন এবং কিছু ভাড়াটে জনবল দিয়ে চলছে জেলার একমাত্র প্রসূতি মা-শিশু চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ কেন্দ্রটি। ২০০৫ সালের ২৭ অক্টোবর একজন মেডিকেল অফিসার, একজন ফিমেল মেডিকেল এটেনডেন্ট ও দুই আনসার সৃষ্ট পদ নিয়ে এ স্বাস্থ্য কেন্দ্র চালু হয়েছে। চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হওয়ায় জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও অন্য জেলা থেকে ডেপুটিশনে সাতজন কর্মচারী আনা হয়েছে এখানে। কয়েক বছর ধরে একজন চিকিৎসক প্রতিদিন শতাধিক নারী ও শিশুকে চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছেন। এনেসথেসিয়া (অবস) চিকিৎসক না থাকায় বন্ধ রয়েছে সিজারিয়ান অপারেশন। মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠার পর থেকে দুজন চিকিৎসকের স্থলে একজন মেডিকেল অফিসার দিয়ে চলছে চিকিৎসা। এনেসথেসিয়া (অবস) চিকিৎসক মাঝেমধ্যে পদায়ন হলেও বেশি দিন থাকছেন না কেউই। মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী চলতি বছরে ৫৩টি সিজারিয়ান অপারেশন হয়েছে। আর নরমল ডেলিভারি হয়েছে ২০৩টি। মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের উপপরিচালক কামাল হোসেন দায়িত্বে থাকাকালে তার ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় একটি অত্যাধুনিক ওটি লাইটসহ সিজারিয়ান টেবিল সংগ্রহ করা হয়। টেকনিশিয়ান না থাকায় তিন বছরেও সেটিও স্থাপন করা যাচ্ছে না। অনেক যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আউট সোর্সিংয়ে নিয়োগ পাওয়া একজন পিয়ন কাম চৌকিদার দিয়ে অফিসের কম্পিউটার অপারেটরের কাজ করানো হচ্ছে। ফিমেল মেডিকেল এটেনডেন্ট শিবানী দাস গুপ্তার পদ অনুযায়ী অপারেশন থিয়েটারে দায়িত্ব থাকলেও তিনি কাজ করছেন অফিস সহকারীর। ২০১২ সালে তিনি এ পদে যোগদানের পর থেকে নিজ দায়িত্বের পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সদর উপজেলার গাভা রামচন্দ্রপুর, নবগ্রাম, কীর্ত্তনপাশা গাবখান ইউনিয়নের চারজন এফডব্লিওভি কয়েক বছর ধরে ডেপুটেশনে রয়েছেন মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে। ২০১৯ সালের জুনে ফার্মাসিস্ট অবসরে যাওয়ায় তার স্থলে দায়িত্ব পালন করছেন এফডব্লিওভি মনিরা সুলতানা। একই সঙ্গে দুটি দায়িত্ব পালন করতে হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানান তিনি। প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় গরিব ও অসচ্ছল রোগীরা বিনামূল্যের চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অত্যাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম থাকার পরও তার ১০ ভাগও কাজে আসছেন বলে রোগীদের অভিযোগ। বাধ্য হয়ে বেশি টাকা খরচ করে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন প্রসূতি মা ও শিশুরা। তারা সরকারের কাছে দ্রুত শূন্য পদে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দিয়ে সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সহজ করার দাবি জানান। ঝালকাঠি জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের উপপরিচালক শহীদুল ইসলাম বলেন, সারা দেশের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে জনবলের সমস্যা রয়েছে। জনবল বাড়ানোর কাজ চলছে। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান। প্রতিষ্ঠার পর থেকে আর কোনো পদ তৈরি না হওয়ায় এ সমস্যা চলছে। জেলা পর্যায়ে একটি পূর্ণাঙ্গ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় কাজ চলছে। তখন ডাক্তার ও জনবল আরও বাড়বে।

 

সর্বশেষ খবর