রবিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

টাকা ছাড়া সেবা মেলে না

নাটোরে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র

নাটোর প্রতিনিধি

বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার কথা থাকলেও নাটোর শহরের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে (ম্যাটারনিটি হাসপাতাল) টাকা ছাড়া প্রসবকালীন সেবা মেলে না রোগীদের। ডেলিভারি রোগীর ক্ষেত্রে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। দাবি অনুযায়ী টাকা দেওয়া না হলে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করা হয়। নিয়মিত হয়রানির শিকার হচ্ছেন সেবা নিতে আসা রোগী ও তার স্বজনরা। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর সমলোচনার ঝড় ওঠে। নাটোর সদর উপজেলার হয়বতপুর গ্রামের দিনমজুর সলেমান আলীর স্ত্রী মিতু বেগমের প্রসব যন্ত্রণা শুরু হলে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়ে আসেন স্বজনরা। হাসপাতালে আসার পর মিতুর নরমাল ডেলিভারি হয়। কিন্তু ভিজিটর ওই রোগীর কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা দাবি করেন। মিতুর চাচি মনোয়ারা বেগম চায়না বলেন, নরমাল ডেলিভারির ক্ষেত্রে কেন এত টাকা দিতে হবে প্রশ্ন করলে ভিজিটর তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। টাকা না দেওয়ায় প্রয়োজনীয় সেবা দিতে গড়িমসি শুরু করেন তিনি। পরে বাধ্য হয়ে তারা ২ হাজার টাকা দেন। রোগীর লোকজন স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের বিষয়টি জানালে তারা তাৎক্ষণিক হাসপাতালে এসে টাকা চাওয়ার কারণ জানতে চান। তখন ভিজিটর ইতি রানী বলেন, আমরা একটানা ১৮ ঘণ্টা ডিউটি করি। সুতা ও ওষুধপত্র বাবদ রোগীর কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়নি। ভালোভাবে বাচ্চা প্রসব করলে মিষ্টি খাওয়ার জন্য কিছু টাকা নেন। অথচ এ হাসপাতালে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার কথা। শহরের আলাইপুর ও মীরপাড়া এলাকার কয়েকজন নারী অভিযোগ করেন, নাটোর শহরের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে (ম্যাটারনিটি হাসপাতাল) টাকা ছাড়া প্রসবকালীন কোনো সেবা মেলে না। এখানে দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত ভিজিটর ইতি রানীর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা নার্স ও কর্মচারী সিন্ডিকেট নরমাল ডেলিভারিতে বাচ্চা হলেও ২ থেকে ৩ হাজার টাকা দাবি করেন। রোগীর স্বজনরা কম টাকা দিলে তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করা হয়। এছাড়া নির্ধারিত কিছু ডায়াগনস্টিক সেন্টারে স্লিপ দিয়ে রোগীদের যেতে বাধ্য করা হয়। অন্য কোনো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করালে তা গ্রহণ করা হয় না। এ ব্যাপারে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. ইয়াদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। নাটোর পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের উপ-পরিচালক মাহফুজা খানম বলেন, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি দেখার পর ইতি রানীসহ সবাইকে আমি সর্তক করেছি। এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর