বুধবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

হঠাৎ পুরো শরীর কালো হয়ে গেল ‘বৃক্ষমানবের’

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

হঠাৎ পুরো শরীর কালো হয়ে গেল ‘বৃক্ষমানবের’

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার ১৩ বছরের কিশোর রিপন দাস। যাকে এলাকার লোকজন চেনেন ‘বৃক্ষমানব’ নামে। দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরলে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েছে সে। তার পুরো শরীর কালো হয়ে গেছে। দুশ্চিন্তায় পড়েছেন দিনমজুর বাবা-মাসহ স্বজনরা। সরকারিসহ বিত্তবানদের সহযোগিতা চান তারা। রিপন দাস পীরগঞ্জের দৌলতপুর গ্রামের দরিদ্র ভ্যানচালক মহেন্দ্র রাম দাসের ছেলে। সরেজমিন দেখা যায়, বাড়ির বারান্দায় মেঝেতে পাটির ওপর শুয়ে আছে রিপন। পাশে বসা বাবা মহেন্দ্র রাম ও মা গোলাপী রানি। ভ্যান চালিয়ে যেখানে সংসার চালানোই কষ্ট সেখানে সন্তানের এমন অসুস্থতায় দিশাহারা পরিবার। জানা যায়, জন্মের তিন মাস পর থেকে হাত-পায়ে শেকড়ের মতো বিরল রোগে আক্রান্ত হয় রিপন দাস। পরবর্তীতে একে ট্রি-ম্যান বা বৃক্ষমানব সিনড্রোম বলে শনাক্ত করেন চিকিৎসকরা।

২০১৬ সালে সবার সহযোগিতায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় রিপনকে। সেখানে প্লাস্টিক সার্জারিসহ তিনটি অপারেশন করা হয়। ২০১৮ সালের দিকে রিপন কিছুটা সুস্থ হলে তাকে বাসায় নিয়ে আসেন স্বজনরা। পরবর্তীতে স্কুলেও ভর্তি হয় সে। হঠাৎ দুই মাস আগে জ্বরে আক্রান্ত হয় রিপন। ধীরে ধীরে পরিবর্তন হতে শুরু করে তার শরীরের রং। একপর্যায়ে সারা শরীর কালো রঙে পরিণত হয়। পায়ে শিকড় আবার বাড়তে শুরু করেছে। ভারী হয়ে উঠেছে শরীর। হাঁটাচলা করতে পারছে না। রিপন দাস বলেন, আগে আমার হাত-পাগুলোতে শিকড়ের মতো গজিয়েছিল। চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে উঠেছিলাম। কিছুদিন থেকে আবার শরীর ত্বক কালো হয়ে যাচ্ছে ও হাত-পা আগের মতো হয়ে যাচ্ছে। আমি সুস্থ হয়ে আবার স্কুলে যেতে চাই। রিপনের বাবা বলেন, টাকার অভাবে ছেলের চিকিৎসা করাতে পারছি না। সবাই সহযোগিতা করলে হয়তো ছেলেটা বেঁচে যাবে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ফয়সাল আজম মোবাইলে বলেন, রিপন স্থানীয় কবিরাজের কাছে তেল নিয়ে ব্যবহার করায় তার ড্রাগ (ওষুধ) রিঅ্যাকশন হয়েছে। বর্তমানে তার ড্রাগ রিঅ্যাকশন চিকিৎসা চলছে। প্লাস্টিক সার্জারি করলে সে হয়তো ভালো থাকবে। ১০০ ভাগ সুস্থ হয়ে উঠবে কি না তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

সর্বশেষ খবর