শনিবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

খোলা আকাশের নিচে ২০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ

আল-মামুন সাগর, কুষ্টিয়া

খোলা আকাশের নিচে ২০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় তাঁতশিল্প আধুনিকরণে প্রায় ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড। আধুনিক এসব যন্ত্রপাতি ক্রয় এবং স্থাপনের কাজ করছে খুলনা শিপইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ। চুক্তি অনুযায়ী কাজের সময় শেষ হয়েছে গত বছরের জুন মাসে। নির্দিষ্ট সময়ের অতিরিক্ত আরও ছয় মাস পরও কাজের অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৩০ শতাংশ। অবশিষ্ট ৭০ ভাগ কাজেরর জন্য প্রায় ২০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ খোলা আকাশের নিচে পলিথিন ও কাঠের বক্স দিয়ে রাখা হয়েছে। রোদ, বৃষ্টি ও ঝড়ে দিনে দিনে নষ্ট হচ্ছে যন্ত্রপাতিগুলো। কুমারখালী তাঁত বোর্ড সূত্রে জানা যায়, খুলনা শিপইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কাজ শুরু করে। গত বছরের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা। সেই লক্ষ্যে খুলনা শিপইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ প্রায় ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ের ৪৬টি যন্ত্রপাতি কুমারখালী তাঁত বোর্ডের কাছে হস্তান্তর করে এবং প্রায় ৩০ শতাংশ স্থাপন করে। অবশিষ্ট যন্ত্রগুলো অবকাঠামোর সঙ্গে সমন্বয় না হওয়া, উপযুক্ত অবকাঠামো না থাকা এবং পুরাতন যন্ত্রপাতি অপসারণে বিলম্ব হওয়ায় এখনো স্থাপন করা যায়নি। যেসব যন্ত্রপাতি স্থাপন করা যায়নি সেগুলো প্রায় ১০ মাস ধরে খোলা জায়গায় এলোমেলো পড়ে আছে। কুমারখালী তাঁত বোর্ডের সহাকরী মহাব্যবস্থাপক মেহেদী হাসান জানান, জায়গার অভাবে যন্ত্রপাতিগুলো বাইরে রাখা হয়েছে। পুরাতন যন্ত্রাংশ গত ডিসেম্বরে অপসারণ করা হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেনি। বিষয়টি বারবার সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তাদের জানানো হচ্ছে। আশা করছি খুব দ্রুত কাজ শুরু করা হবে। কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ বলেন, ‘কোটি কোটি টাকার যন্ত্র দিনের পর দিন এভাবে পড়ে আছে অথচ দেখার কেউ নেই। লোক নেই, অবকাঠামো নেই। তাহলে যন্ত্রপাতি কেনার দরকার কী? যন্ত্র চলুক বা না চলুক, কোনো অসুবিধা নেই। এই বিপুল পরিমাণ টাকার হিসাব কে দেবেন? প্রয়োজনীয় অবকাঠামো যদি না থাকে তাহলে কার স্বার্থে এসব মূল্যবান যন্ত্রপাতি কেনা হলো তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কুমারখালী উপজেলা তাঁত উন্নয়ন সমবায় সমিতির সভাপতি শওকত আলী বলেন, সরকার তাঁতশিল্পকে আধুনিকায়ন ও তাঁতিদের ভাগ্যবদলের জন্য প্রায় ৩৪ কোটি টাকার যন্ত্রাপতি বরাদ্দ দিয়েছেন। তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান ও কর্মকর্তাদের অবহেলায় মেয়াদ শেষ হলেও কাজ সম্পন্ন হয়নি। কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপতি খোলা আকাশের নিচে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে, যা নষ্টের উপক্রম। দ্রুত যন্ত্রপাতিগুলো স্থাপন করা না হলে তারা কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি পালন করতে বাধ্য হবেন।

সর্বশেষ খবর