শনিবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভাঙনের হুমকিতে নদীরক্ষা বাঁধ ও বসতবাড়ি

কামরুজ্জামান সোহেল, ফরিদপুর

ভাঙনের হুমকিতে নদীরক্ষা বাঁধ ও বসতবাড়ি

ফরিদপুরে পদ্মা নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধ ও বসতবাড়ি হুমকিতে ফেলে গভীর গর্ত করে কাটা হচ্ছে তীর-সংলগ্ন মাটি। এর ফলে আগামী বর্ষা মৌসুমে পদ্মার তীর সংরক্ষণ বাঁধ ও ওই এলাকার বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা এলাকাবাসীর। এমন ঘটনা ঘটেছে ফরিদপুর সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়নের ধলার মোড় এলাকায়। ধলার মোড় থেকে উত্তরে সিঅ্যান্ডবি ঘাটের দিকের মদনখালী এলাকায় কুমার নদের উৎসমুখ পর্যন্ত এবং পূর্বদিকে পদ্মা নদীর পানি পর্যন্ত অংশজুড়ে চলছে এ মাটি কাটার মহোৎসব। স্থানীয় এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে ও সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, দুটি এস্কেভেটর (ভেকু) দিয়ে মাটি খনন করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি ওই এলাকায় আরও তিনটি এস্কেভেটর বন্ধ অবস্থায় রয়েছে। দেখা গেছে, ৩৫ থেকে ৪০ ফুট পর্যন্ত বিশাল গভীর করে নদীর তীর থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত পাঁচটি এস্কেভেটর দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। এ মাটিগুলো ট্রাকে ভরে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন শত শত ট্রাক এ মাটি বহন কাজে নিয়োজিত রয়েছে। মাটি কাটার সঙ্গে জড়িত একটি এস্কেভেটরচালক শহরের আলীপুর মহল্লার বাসিন্দা মো. রমজান বলেন, তারা প্রতি রাতে নদীর তীরের মাটি কাটেন। এক রাতে তিনি ৬০ থেকে ৬৫ ট্রাক মাটি কাটতে পারেন। তিনি বলেন, একটি ট্রাকে প্রায় ২০০ ঘনফুট মাটি ধরে। মাটি কাটার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, একটি এস্কেভেটর দিয়ে ৬০ ট্রাক মাটি কাটা হলে এবং প্রতি ট্রাক ২০০ ঘনফুট মাটি ভর্তি করা হলে রাত ৮টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত ১২ হাজার ঘন ফুট মাটি কাটা যায়। সে হিসাবে প্রতি রাতে পাঁচটি এস্কেভেটর দিয়ে মাটি কাটা হলে এক রাতে পদ্মা নদীর তীর থেকে কমপক্ষে ৬০ হাজার ঘনফুট মাটি কাটা সম্ভব। প্রতি ঘন ফুট মাটি বিক্রি করা হচ্ছে পাঁচ টাকা দরে। সে হিসাবে প্রতি রাতে মাটি কাটা হচ্ছে ৩ লাখ টাকা মূল্যের। এর মধ্যে পাঁচ এস্কেভেটরের ১০ জনকে প্রতি ঘণ্টায় ২০০ টাকা দিলে টাকা খরচ হচ্ছে ২০ হাজার। যারা মাটি কাটছে তাদের জন্য থাকে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা বলেন, পদ্মার তীরে মাটি কাটা হচ্ছে- এ খবর শুনে তিনি কর্মকর্তাদের সরেজমিন পাঠিয়েছিলেন। তিনি বলেন, তারা জানিয়েছে নদীর তীরের যে জায়গা থেকে মাটি কাটা হচ্ছে তাতে খুব শঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।

সর্বশেষ খবর