শিরোনাম
শনিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে দিশাহারা পোলট্রি খামারিরা

পাবনা প্রতিনিধি

খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে দিশাহারা পোলট্রি খামারিরা

পোলট্রি শিল্পে মুরগির বাচ্চা ও খাদ্যের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধির দিশাহারা পাবনার প্রান্তিক খামারিরা। বিভিন্ন সময়ে এসব পণ্যের দাম কমানোর দাবি জানিয়ে এলেও কর্তৃপক্ষের নজরে আসেনি বলে অভিযোগ করেছেন তারা। খামারিরা বলেন, পোলট্রি খাতে মুরগির বাচ্চা ও খাদ্য উৎপাদক কোম্পানিগুলো সিন্ডিকেট করে অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি করেছে। মাত্র এক বছরের মধ্যে ৫০ কেজি বস্তার খাদ্যের দাম ১৭০০ টাকা থেকে বেড়ে ২৫০০ টাকায় ঠেকেছে। এতে উৎপাদন খরচ বাড়লেও, আনুপাতিক হারে বাড়েনি ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম। পাবনা জেলা প্রান্তিক পোলট্র্রি শিল্প সংগঠনের আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সময়ে মুরগির বাচ্চা ও খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো মুরগি ও ডিম উৎপাদন শুরু করেছে। নিম্নমানের খাবার ও বাচ্চা সরবরাহ করে প্রান্তিক খামারিদের ক্ষতিগ্রস্ত করা হচ্ছে। বাজারের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতেই পরিকল্পিতভাবে প্রান্তিক খামারিদের ধ্বংসের ষড়যন্ত্র চলছে। এ খাতে সরকারি নজরদারি না হলে অচিরেই প্রান্তিক পোলট্রি শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে। জহুরুল ইসলাম নামে এক খামারি জানান, খাবার, ওষুধসহ পরিচর্যা ব্যয় ধরে একটি লেয়ার মুরগি ডিম দেওয়ার উপযোগী করতে উৎপাদন ব্যয় কমপক্ষে ৭০০ টাকা। ডিম দেওয়া শুরু করলে মুরগিটি প্রতিদিন আট টাকার খাবার খায়। খামারের সব মুরগি খাবার খেলেও প্রতিদিন ডিম দেয় না। বর্তমান বাজারে প্রতিটি ডিমের পাইকারি মূল্য আট থেকে নয় টাকা। এতে খামারিদের টানা লোকসান হচ্ছে। পাশাপাশি কোনো কারণে মুরগি মারা গেলে সর্বস্বান্ত হতে হচ্ছে খামারিদের। পোলট্রি খামারি আবদুল আলীম বলেন, একটি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন ব্যয় কমপক্ষে ১৬০ টাকা। বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম পাইকারি ১৫০ টাকা। কোম্পানিগুলো নিম্নমানের বাচ্চা সরবরাহ করায় খামারে প্রায় মুরগি মারা যায়। খাদ্যের মানও খুবই খারাপ। ফলে সবদিক থেকে আমাদের লোকসান হচ্ছে। সদর উপজেলা প্রান্তিক পোলট্র্রি খামারি সমিতির আহ্বায়ক হেলাল উদ্দিন বলেন, আমরা খামারিকে বাঁচাতে সরকারের কাছে আকুতি জানাচ্ছি। এ খাত ধ্বংস হলে পাবনা জেলায় সহস্রাধিক খামারি বেকার হয়ে পড়বে। পোলট্রি খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে খাদ্য ও বাচ্চার দাম কমানোসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়েছি। আমরা চাই সরকার অচিরেই পোলট্রি শিল্পের মুরগির বাচ্চা ও খাদ্যের দাম কমাতে উদ্যোগ নেবে। ৫০ কেজি ওজনের প্রতি বস্তা খাদ্য ১৮০০ টাকার মধ্যে রাখতে হবে। খাদ্য ও বাচ্চা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বাজারের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ বন্ধে তাদের মুরগি ও ডিম উৎপাদনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। পাশাপাশি প্রান্তিক খামারিদের সহজ শর্তে ঋণসহ কয়েকটি দাবি তুলে ধরেছি। আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। সরকার আমাদের বাঁচাতে উদ্যোগ নেবে। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আল মামুন হোসেন মন্ডল বলেন, বাজারে খাদ্য ও বাচ্চার চাহিদা বাড়লে দাম বাড়ে, এটি ওঠা-নামাও করে। তবে নিম্নমানের খাদ্য ও বাচ্চার বিষয়টি আমরা মনিটরিং করছি। সরকার প্রান্তিক খামারিদের প্রতি আন্তরিক। খামারিদের অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

সর্বশেষ খবর