শনিবার, ৪ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

মরে যাচ্ছে ভৈরব!

মাহবুবুল হক পোলেন, মেহেরপুর

মরে যাচ্ছে ভৈরব!

একসময় ভৈরবের তীব্র গর্জন শুনতে পেত মানুষ। বড় বড় জাহাজ ভিড়তো এ ভৈরবে। কালের পরিক্রমায় ভৈরব যৌবন হারায়। পুনরায় নদীর যৌবন ফেরাতে পাঁচ বছর আগে প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে খনন করা হয়। সঠিক রক্ষাণাবেক্ষণের অভাবে শত কোটি টাকার কাজের লক্ষ্য এখন ভেস্তে যেতে বসেছে। সঠিকভাবে নদীশাসন ব্যবস্থা গড়ে না ওঠায় নদীর দুই পাড়ে দেখা দিয়েছে ভাঙন। পৌরসভার সুয়ারেসের বর্জ্য এসে পড়ে নদীর তলদেশ উঁচু হচ্ছে। নদীর বুকজুড়ে এখন কচুরিপানা দখল করেছে। এতে মরে যেতে বসেছে  ভৈরব। এক সময়ের স্রোতস্বিনী ভৈরবের ভবিষ্যৎ নিয়ে আবার চিন্তিত পরিবেশবিদ ও নদীপাড়ের মানুষ। ভৈরবের বুকে কচুরিপানার  আস্তরণ পড়ে যাওয়ায় নদীটি তার জৌলুস হারিয়েছে। কচুরিপানা শুকিয়ে নদীর পানি রং কালো আকার ধারণ করেছে। নোংরা আবর্জনার স্তূপ ভৈরবে। অনেক স্থানে নোংরা আবর্জনা পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। অথচ নদীটি খননের পর নদীর বুকভরা পানি ছিল। পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বচ্ছ টলটলে পানি আর নদী তীরের ফুরফুরে হাওয়ায় আনন্দ নিতে প্রতিদিন প্রকৃতিপ্রেমী তরুণ-তরুণী ভিড় করতেন নদী তীরে। নদীর তীরবর্তী যাদবপুর গ্রাম বসবাসরত সিদ্দিীকুর রহমান জানান-  কচুরিপানা আর ময়লার কারণে গুমট পরিবেশ তৈরি হয়ে নদী মরে যেতে বসেছে। মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের দাবি  ভৈরব নদীর পানি প্রবাহ ও নদী সঠিকভাবে রক্ষা করা গেলে নদীর দুই তীরের প্রায় ২১ হাজার হেক্টর জমি সেচ সুবিধা ফিরে পাবে। মেহেরপুর জেলা প্রশাসক মনসুর আলম খান জানান, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর চেষ্টায় প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ভৈরব খনন হয়। নদী তীরে চলাচলের পথসহ তীরের সৌন্দর্যবর্ধন করা হয়। কিন্তু কচুরিপানা নদীর সৌন্দর্যকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তিনি জানান, দ্রুতই নদীর বুক থেকে কচুরিপানা অপসারণ করে ভৈরবের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা হবে। মেহেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহিনুজ্জামান জানান, ভৈরব নদের ২৯ কিমি. খনন কাজ শেষ হয়েছে। বাকি ৩০ কিমি. নদের খননের কাজ চলছে। নদে প্রবাহ না থাকায় কচুরিপানায় ভরে গেছে ভৈরব। কচুরিপানা অপসারণের জন্য মেশিন কেনা বাবদ অর্থ চাওয়া হয়েছে। মেশিন পেলে কচুরিপানা অপসারণ করে নদের স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর